আতঙ্ক কাটেনি। — নিজস্ব চিত্র
পাঁচ বছরের মেয়ের গলায় ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে এক প্রাথমিক শিক্ষকের বাড়ি থেকে সোনা ও নগদ টাকা লুঠ করে পালাল এক দল দুষ্কৃতী। শুক্রবার গভীর রাতে ইসলামপুর থানার ইসমাইলচকের মসজিদ নগরে ঘটনাটি ঘটেছে।
পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক জফরুল ইসলামের বাড়ি ইসলামপুর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। তাঁর পরিবারসূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত আড়াইটা নাগাদ ওই বাড়ির ছাদের দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। সে সময় পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। পাশের ঘরে কয়েক মাসের শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন তার স্ত্রী শবনম জাহান। ঘরের দরজা ভাঙার আওয়াজ পেয়ে ঘুম ভেঙে যায় তাঁদের। ওই দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে পাঁচ বছরের শিশু কন্যা ইফরা জাফারকে টেনে তুলে তার গলায় ধারাল অস্ত্র ঠেকিয়ে আলমারির চাবি চাইতে থাকে। ডাকাতদের প্রত্যেকের মুখই কালো কাপড় দিয়ে বাধা ছিল তাই কাউকেই চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি। তাঁরা জানান, আলমারির চাবি না দিলে মেয়ের গলায় ছুরি চালিয়ে দেবে বলে হুমকি দিচ্ছিল ডাকাতরা। বাধ্য হয়েই তাদের হাতে চাবি তুলে দেন তাঁরা। দুই ভরি সোনার গয়না ও প্রায় ১৫ হাজার টাকা নগদ নিয়ে ছাদের দরজা দিয়েই পালিয়ে যায় তারা। যাওয়ার সময় নিয়ে যায় ওই শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী মোবাইল ফোন দু’টিও।
শনিবার সকালেও আতঙ্কের ছাপ ওই শিক্ষকের স্ত্রী শবনম জাহানের চোখে। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের মন্টেসরিতে পড়াশোনা করে। এ দিন সে তার বাবার সঙ্গে ঘুমাচ্ছিল। হঠাৎই আওয়াজ পেয়ে ঘুম ভেঙে দেখি ৫ থেকে ৬ জন লোক ঘরে ঢুকে পড়েছে। প্রত্যেকেরই হাতে ছুরি। তার মধ্যে এক জন মেয়ের গলায় ছুরি ধরে আমাদের কাছে আলমারির চাবি চায়। যতক্ষণ ছিল ছুরিটা মেয়ের গলায় ঠেকিয়ে রেখেছিল। যদি কিছু করে ফেলত মেয়েটাকে ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে।’’ পাঁচ বছরের শিশু ইফরা জাফারের মুখ থেকেও আতঙ্ক কাটেনি এখনও। ‘‘আবারও ওরা ফিরে আসবে নাতো?’’ কিছুক্ষণ পরে পরেই এই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে ছোট্ট মেয়েটা।
জনবহুল এলাকায় এই ডাকাতির ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারাও। পুলিশ জানিয়েছে অভিযুক্তদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি চালানো হচ্ছে।