ছুটিতে হাজির থাকায় আবির

দোল দখল করল স্বাস্থ্য পরিষেবাও

দু’দিন দোল। তার আগে শনিবার। টানা তিন দিন সরকারি ছুটি। জরুরি পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে বলে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হলেও বাস্তবে নাকাল হতে হয়েছে অনেককেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৭ ০২:৩০
Share:

অপেক্ষা: হাসপাতালের বহির্বিভাগে ভিড়। নিজস্ব চিত্র।

দু’দিন দোল। তার আগে শনিবার। টানা তিন দিন সরকারি ছুটি। জরুরি পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে বলে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হলেও বাস্তবে নাকাল হতে হয়েছে অনেককেই। হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসক-কর্মী না থাকায় ভুগতে হয়েছে রোগীদের। আবার কোনও জেলায় ‘ছুটি’তেও চিকিৎসক-কর্মীদের হাজির থাকায় অভিনন্দনও কুড়িয়েছেন তাঁরা। ঠিক কেমন ছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবার ছবি?

Advertisement

শিলিগুড়ি

হোলি উপলক্ষে ছুটির মেজাজ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকদের একাংশ ছুটিতে চলে গিয়েছেন। জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর ভর করেই রবিবার এবং সোমবার চিকিৎসা পরিষেবা চলছে বলে অভিযোগ। এ দিন সুপারের দফতরও খোলেনি। ডেপুটি সুপার অবশ্য দফতরে ছিলেন। হোলির ছুটি উপলক্ষে কোনও আলাদা রোস্টারও তৈরি হয়নি। তবে শিলিগুড়ির বিভিন্ন ব্লক হাসপাতালগুলিতে সোমবার বহির্বিভাগ খুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। ফাঁসিদেওয়া ব্লক হাসপাতাল, সুকনার মতো স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে চিকিৎসকদের একাংশ ছুটিতে। অন্য দিনের তুলনায় সোমবার রোগীর সংখ্যাও কম ছিল বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

কোচবিহার

সোমবার হোলিতে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বাদ দিয়ে জেলার বেশিরভাগ গ্রামীণ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আউটডোর সময়ে খোলেনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ১৬টি ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতাল, চাঁচলে একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং ৩৪টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আউটডোর চালু রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি হাসপাতালকে প্রতিদিন আউটডোর সংক্রান্ত রিপোর্ট বেলা ১০টার মধ্যে এসএমএসের মাধ্যমে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবনে পাঠাতে হয়। কিন্তু এ দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত জেলার মাত্র দু’টি হাসপাতাল সেই রিপোর্ট পাঠিয়েছে। বেশি বেলা করেই অধিকাংশ হাসপাতালের আউটডোর পরিষেবা চালু ছিল। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘কোথায় কোথায় দেরি করে বহির্বিভাগ চালু হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

উত্তর দিনাজপুর

গত রবিবার দুপুরে করণদিঘির বোতলবাড়ি এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় সাইকেল আরোহী এক ব্যক্তি জখম হন। তাঁকে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে দু’ঘণ্টারও বেশি সময় বিনা চিকিত্সায় পড়ে থেকে ওই ব্যক্তি মারা যান বলে অভিযোগ। মৃতের পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ভাঙচুর করেন। হাসপাতাল সুপার গৌতম মণ্ডলের দাবি, অভিযোগ ভিত্তিহীন। হাসপাতালে বর্তমানে ৬০ জন চিকিত্সক রয়েছেন। তবে দোল ও হোলি উত্সবের জেরে পর পর দু’দিন বহু চিকিত্সক অনুপস্থিত বা দেরি করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে রাউন্ড দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

আলিপুরদুয়ার

দোলের দিন রোগীর ভিড়ের জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগ খুলে রেখেছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে সকাল থেকে হাতে গোণা রোগী এলেও বহির্বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের মাথায় আবিরের টিকা লাগিয়ে গিয়েছেন অনেকেই। খোলা ছিল জেলা হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্ক, জরুরিবিভাগে সহ সমস্ত বিভাগে। এদিন দলগাঁও বীরপাড়া থেকে রোগীর আত্মীয় এসে রক্ত সংগ্রহ করেছেন। হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, এ দিন দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অন্য দিনের চেয়ে বেশি থাকে।

জলপাইগুড়ি

হোলিতে ছুটির মেজাজে জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালও৷ সকাল থেকেই দেখা নেই মাতৃযানের৷ সময়ের আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে আউটডোরের একাধিক বিভাগ৷ আরও অভিযোগ, আউটডোরের বেশির ভাগ বিভাগই নির্ধারিত সময় দু’টোর অনেক আগেই বন্ধ হয়ে যায়৷ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ‘‘কেন এমনটা হল খোঁজ নিচ্ছি।’’ মাতৃযানের অভাবে অনেকেই বাধ্য হয়ে গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি যেতে পেরেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন