উদ্ধার: কারখানা থেকে পাওয়া অস্ত্র। কালিয়াচকে। নিজস্ব চিত্র
সবাই জানে গ্রিলের কারখানা হিসেবে। পুলিশি অভিযান হতেই সেই গ্রিল কারখানাতেই হদিশ মিলল আগ্নেয়াস্ত্রের ভাণ্ডারের। আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির প্রচুর সরঞ্জামও উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বেআইনি অস্ত্র তৈরির দুই কারিগরকে। শুক্রবার রাতে এই অভিযান চলে মালদহের কালিয়াচক থানার শেরশাহী গ্রামে। দিনের পর দিন ধরে এখানে চলছিল অস্ত্র তৈরির কারবার। এজন্য পুলিশি নজরদারিকেই দুষেছেন এলাকার মানুষ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত মহম্মদ তামরেজ ও মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের বাড়ি বিহারের মুঙ্গের জেলায়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ২৪টি পাইপগান। সেই সঙ্গে ছেনি, হাতুড়ি, লোহার রড কাটার যন্ত্র, হ্যাক্শ ব্লেড, ট্রিগার-সহ বেশকিছু সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। যা দিয়ে আরও শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করা যায় বলে দাবি পুলিশকর্তাদের। শনিবার ধৃতদের মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘কারখানার মালিকের খোঁজ শুরু হয়েছে। ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার পর আরও তথ্য মিলবে।’’
মালদহে অস্ত্র কারখানার হদিশ নতুন কোনও ঘটনা নয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগেই পুরাতন মালদহে হদিশ মিলেছিল অস্ত্র কারখানার। তখনও গ্রেফতার হয়েছিল বিহারের মুঙ্গেরের একাধিক কারিগর। জানা গিয়েছে, কালিয়াচক থানার আলিপুর-২ পঞ্চায়েত অফিসের সামনে কালিয়াচক-গোলাপগঞ্জ রাজ্য সড়কের ধারেই রয়েছে গ্রিল কারখানাটি। মালিক মোজমপুর গ্রামের বাসিন্দা ফরিদ শেখ। পুলিশ জানিয়েছে, মজুরির ভিত্তিতে মুঙ্গের থেকে নিয়ে আসা হয় কারিগর। তারা আবার প্রশিক্ষণ দেয় স্থানীয়দের। দিনে এক থেকে দু’টি করে পাইপগান তৈরি করতে পারে কারিগরেরা। একটি পাইপগানের মজুরি বাবদ মেলে পাঁচশো থেকে ছ’শো টাকা।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মাসখানেক ধরে বেআইনি অস্ত্রের কারখানাটি চলছে। ইতিমধ্যে ২৪টি পাইপগান তৈরি হয়েছে। অস্ত্র কী উদ্দেশে তৈরি করা হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ফরিদেরও খোঁজ চলছে। মোজমপুরের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তৃণমূলের লুতফর রহমান বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেই আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। ভাবতেই পারছি না জনবহুল এলাকায় এমন কারবার চলতে পারে।’’