গিন্নিদের দরবার

সারা দিন না খেয়ে কী করে যে থাকে

কর্তা যখন মন্ত্রী...তাঁরা রয়েছেন অন্তরালে। কিন্তু তাঁরাই প্রধান শক্তি। উত্তরবঙ্গের তিন দাপুটে রাজনীতিকের অন্তঃপুর থেকে পাওয়া গেল সেই বার্তাই। এই তিন মন্ত্রীর গৃহিণীরা জানালেন স্বামী-সংসার নিয়ে ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথাও।তখন সদ্য বিয়ে হয়েছে। স্বামীকে দেখে ভাবতাম, সারা দিন না খেয়ে কী করে কেউ থাকতে পারে। হয়ত সকালে টক দই আর চিঁড়ে খেয়ে বেরিয়েছে। ফিরল অনেক রাতে। জিজ্ঞেস করে জানালাম, সারা দিন নাকি চা আর বিস্কুট ছাড়া কিছুই খায়নি।

Advertisement

রাধারানি রায় (বর্মন) (বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের স্ত্রী)

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৬ ০৩:১২
Share:

একটু অবসরে বাড়িতে স্ত্রী-কন্যার সঙ্গে।

তখন সদ্য বিয়ে হয়েছে। স্বামীকে দেখে ভাবতাম, সারা দিন না খেয়ে কী করে কেউ থাকতে পারে। হয়ত সকালে টক দই আর চিঁড়ে খেয়ে বেরিয়েছে। ফিরল অনেক রাতে। জিজ্ঞেস করে জানালাম, সারা দিন নাকি চা আর বিস্কুট ছাড়া কিছুই খায়নি। যে দিন বাড়িতে থাকত, দু’দণ্ড যে কথা বলব, তারও উপায় নেই। সারা দিন বাড়িতে লোকের ভিড় আর রাজনীতির আলোচনা। আমি আটপৌরে গৃহবধূ। সংসারই আমার কাছে সব। তাই স্বামীর জীবনযাপন নিয়ে খুব চিন্তায় থাকতাম। পরের দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলে দিতাম, দুপুরে খেতে আসবে না জানি, অন্তত অন্য কারও বাড়িতে সময় করে খেয়ে নিও। রাতে বাড়ি ফিরলে প্রথম প্রশ্নই জিজ্ঞেস করতাম, ‘‘দুপুরে খেয়েছো তো?’’ সারা দিন ছোটাছুটি করে ক্লান্ত হয়ে ফিরলেও রোজ রোজ আমার প্রশ্ন শুনে উনি কিন্তু বিরক্ত হননি কোনও দিন। হাসি মুখে বলেছেন, ‘‘খেয়েছি।’’ আমি কোনও দিন মুখ দেখে বুঝতে পারতাম, মোটেই খাওয়া হয়নি দুপুরে। আমি যাতে দুঃখ না পাই, তাই খেয়েছি বলেছে। তবু খুশিই হতাম। আমি যাতে দুঃখ না পাই, তাই তো বলেছে।

Advertisement

কখন যে ওঁর জীবনযাপনও আমার ভাল লাগতে শুরু করল, তা টের পাইনি। তবে একটা সময় উপলব্ধি করলাম, স্বামী যে কাজ করছেন, সেই কাজে যাতে কোথাও কোনও অসুবিধে না হয়, সে জন্য তাঁকে সাহায্য করতে হবে। বাইরে তো আর আমি সাহায্য করতে পারব না। যাতে বাড়ি ফেরার পর কোনও অসুবিধেয় না পড়েন। যা যা খেতে ভালবাসেন, সে সব যেন তৈরি করে রাখতে পারি। সে চেষ্টা আমি এখনও করি। সংসারের ব্যাপারে অবশ্য তিনি কখনও উদাসীন ছিলেন না। সব কিছু মানে সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাড়িতে এনে রেখে বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করতেন। তার পরেও নানা কিছু প্রয়োজন হত। সেগুলি আমি জোগাড় করার চেষ্টা করতাম। সব সময় ভাবতাম তিনি যেন কোনও ব্যাপারে কখনও বিব্রত না হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন