তৃতীয় সাউথ এশিয়া চকবল চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা হয়েছে ভারতীয় দল। আর ওই দলে খেলেছেন শিলিগুড়ির ছেলে সুমন রায়।
শনিবার দার্জিলিং জেলা চকবল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এ খবর জানানো হয়। এদিনই হরিদ্বারে ফাইনালে ভারত ৬১-৪০ পয়েন্টে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। জয়ী ওই দলেই খেলেছে সুমন। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সুমনের বাড়ি হায়দরপাড়ায়। সুমন শিলিগুড়ি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাঁদের সংসারের আর্থিক পরিস্থিতি ভাল নয়। বাবা সত্যেন্দ্রনাথবাবু দিনমজুরি করে সংসার চালান। অভাবের সঙ্গে লড়াই করেই পড়াশোনা এবং খেলা চালাতে হয় তাঁকে।
দার্জিলিং জেলা চকবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তথা জেলা বিদ্যালয় ক্রীড়া পর্ষদের সভাপতি মদন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, সুমন ভারতীয় চকবল টিমে সুযোগ পেয়েছে জানার পর দুশ্চিন্তায় পড়েছিল। কেন না এ ধরনের প্রতিযোগিতায় যেতে ফেডারেশনকে ১৬ হাজার টাকা জমা দিতে হয় জার্সি, ট্র্যাকস্যুট, কিট এ সবের জন্য। আর যাতায়াতের জন্য দরকারছিল ৩ হাজার টাকা। সুমনের কাছে সেই টাকা ছিল না। সুযোগ পেয়েও সে জন্য চিন্তায় পড়েছিলেন সুমন। শেষে ওই টাকা দিয়ে তাঁকে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন মদনবাবুই। তিনি বলেন, ‘‘এশিয়ান চকবল চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় সুমনের জন্য আমরা গর্বিত। তিনি শিলিগুড়ি ফিরলে তাঁকে সংবর্ধনা জানানো হবে।’’
আগামী ২৫ মে তাঁর শিলিগুড়ি ফেরার কথা বলে সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। চকবল অ্যাসোসিয়েশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯-২১ মে হরিদ্বারে এই চকবল প্রতিয়োগিতা হয়। এ দিন ছিল ফাইনাল। পকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভূটান, বাংলাদেশ, ভারত এই কয়েকটি দেশ অংশ নেয়। গত ১২ মে শিলিগুড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন সুমন। চকবলে কৃতী খেলোয়াড়দের সরকারের তরফে যাতে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় সে জন্য আর্জি জানো হবে বলে সংগঠনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে শিলিগুড়িতে প্রথম চকবল শুরু হয়। বর্তমানে শিলিগুড়ি শহরে অনম্ত ৩০ টি স্কুলে চকবল খেলা হচ্ছে। চম্পাসারির শ্রীগুরু বিদ্যামন্দিরের মাঠে বিকেলে নিয়মিত অনুশীলন হয়। শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন ব্লকেও এ ধরনের অনুশীলন শিবির রয়েছে। সুমনের এই সাফল্যের পর চকবলে পড়ুয়াদের আরও বেশি করে উৎসাহী করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে সংগঠনের তরফে জানানো হয়।