ধোঁয়ায় থমকাল ট্রেন

রেল সূত্রের খবর, ১৯৩০৫ আপ ইনদওর-কামাখ্যা সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে ছেড়ে অসমের কোকরাঝাড় স্টেশনে গিয়ে থামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জোড়াই শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৬:৪৫
Share:

থমকে: জোড়াই স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন। তখনও গলগল করে বের হচ্ছে ধোঁয়া। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

চলন্ত ট্রেনের চাকায় আগুনের ফুলকি এবং তা থেকে ধোঁয়া বেরনোর ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াল। শনিবার সকালে কামাখ্যাগুড়ি ও কোচবিহার জেলার জোড়াই স্টেশনের মাঝে আপ ইনদওর-কামাখ্যা এক্সপ্রেসের ঘটনা। রেলকর্মীদের নজরে আসায় ট্রেনটিকে জোড়াই স্টেশনে দাঁড় করানো হয়। রেলকর্মীরাই বিশেষ রাসায়নিক পাউডার ছিটিয়ে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে বারবিশা দমকল কেন্দ্রের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, ১৯৩০৫ আপ ইনদওর-কামাখ্যা সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস আলিপুরদুয়ার জংশন থেকে ছেড়ে অসমের কোকরাঝাড় স্টেশনে গিয়ে থামে। এ দিন আলিপুরদুয়ার ছাড়ার পর বেলা ১১টা ২৫ মিনিট নাগাদ কামাখ্যাগুড়ি স্টেশনের রেলকর্মীরা চলন্ত ওই ট্রেনের এস-৭ কামরার চাকায় কিছু সমস্যা দেখতে পান। দ্রুত তাঁরা আট কিলোমিটার দূরে কোচবিহারের জোড়াই রেল স্টেশনে খবর দেন। কামাখ্যাগুড়ির পর জোড়াই স্টেশনের উপর দিয়েই ট্রেনটির কোকরাঝাড়ের দিকে যাওয়ার কথা।

কিন্তু জোড়াই স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই ওই কামরা চাকা থেকে ধোঁয়া বেরতে শুরু করে। কামরার মধ্যেও সেই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়তেই যাত্রীরা ব্যাপক আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। জোড়াই স্টেশনের এক কর্তা পরে বলেন, ‘‘কামাখ্যাগুড়ি থেকে খবর পাওয়ার পর ট্রেনটিকে আমাদের স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ট্রেনটি স্টেশনের পৌঁছনোর মুখে চাকা থেকে অনর্গল ধোঁয়া বেরতে দেখে এক গেটম্যানও আমাদের খবর দেন। সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিনির্বাপক ও রাসায়নিক পাউডার নিয়ে আমরা তৈরি হয়ে যাই।’’

Advertisement

বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে ট্রেনটি জোড়াই স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়াতেই ট্রেনের ওই কামরা থেকে যাত্রীদের নামতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সাপ্তাহিক এই ট্রেনটিতে প্রচুর পুণ্যার্থী কামাখ্যায় পুজো দিতে যান। এ দিনও ট্রেনটিতে প্রচুর কামাখ্যা-যাত্রী ছিলেন এঁদেরই একজন বারাণসীর বাসিন্দা বৃদ্ধা সুনু শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘ট্রেনের চাকা থেকে এ ভাবে ধোঁয়া বেরতে দেখে খুব ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। ট্রেন স্টেশনে থামতেই কোনওমতে নেমে পড়ি।’’ আর এক যাত্রী বিনোদ শর্মা বলেন, ‘‘আচমকা আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়া দেখে সবাই যেভাবে ছোটাছুটি শুরু করে দিয়েছিলেন, তাতে খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।’’

জোড়াই স্টেশনে রেলকর্মীরাই প্রথমে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তারপর বারবিশা দমকল কেন্দ্রের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। ওই দমকল কেন্দ্রের আধিকারিক বিচিত্র তরফদার বলেন, ‘‘দীর্ঘক্ষণ জল দিয়ে চাকাগুলিকে ঠান্ডা করা হয়।’’ রেলকর্তারা জানান, ট্রেনের ব্রেক কষার সময় সেই ব্রেক চাকার সঙ্গে আটকে যায় অনেক সময়। এই ঘটনাকেই ব্রেক বাইন্ডিং বলা হয়। চাকার সঙ্গে ব্রেকের একটানা ঘর্ষণে সেই জায়গাটা গরম হয়ে আগুনের ফুলকি ও ধোঁয়া বেরোয়। আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম কে এস জৈনও বলেন, ‘‘ব্রেক বাইন্ডিং থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে এর ফলে কারও কোনও ক্ষতি হয়নি। অন্য কোনও ট্রেনের চলাচলেও বিঘ্ন ঘটেনি।’’ রেল সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর ১২টা ৫০মিনিটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ট্রেনটি রওনা হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন