এনজেপি লাগোয়া এলাকার কিশোরী মল্লিকা মজুমদারের অঙ্গদানের পরে শিলিগুড়ির নানা স্তরের বাসিন্দাদের মধ্যেই তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। অঙ্গদানের খুঁটিনাটি জানতে অনেকেই সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে সরকারি বা বেসরকারি ক্ষেত্রে অঙ্গদান ও অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত সেরকম কোনও পরিকাঠামো নেই। এই অবস্থায় অঙ্গদানের বিষয়ে সচেতনতা তৈরির জন্য শিলিগুড়িতে ‘ট্রান্সপ্ল্যান্ট ক্লিনিক’ চালু করল বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থা।
শুক্রবার শিলিগুড়িতে ওই সংস্তার উদ্যোগে সামিল হয়েছে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালও। বেঙ্গালুরুর ওই হাসপাতালের অন্যতম ডিরেক্টর নীতিন মঞ্জুনাথ বলেন, ‘‘ব্রেন ডেথের পরে অঙ্গদানের বিষয় সকলের সম্যক ধারণা নেই। কিন্তু, অনেকেই আগ্রহী। যেমন শিলিগুড়ির মল্লিকার পরিবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তেমনই অনেকেই এ বিষয় কৌতুহল প্রকাশ করেছেন। তাই আমরা সারা বছর শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গে অঙ্গদান বিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচি চালাব।’’
সেই সঙ্গে ব্রেনডেথের পরে কেউ অঙ্গদান করলে সব বিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে গ্রহীতার শরীরে প্রতিস্থাপন করানো যায় সেই ব্যবস্থাও করবে ওই দু’টি সংস্থা।
বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কোনও পরিকাঠামো নেই। আগে কর্ণিয়া প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা থাকলেও এখন তা নেই। ফলে, অঙ্গদান করলে কী হবে তা নিয়ে নানা সংশয় রয়েছে আগ্রহীদের মনে। বেঙ্গালুরু ও কলকাতার দু’টি সংস্থার তরফে তাই শিলিগুড়ির চিকিৎসক ছাড়াও নানা স্তরের বাসিন্দাদের নিয়ে একটি আলোচনা সভাও করা হয়েছে।
এ দিন উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কারও ব্রেনডেথ ঘোষণার পরে অঙ্গদান করতে পারেন পরিবারের সদস্যরা। সেই দানেরও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। দান করার পরেই যে কেউ তা পাবেন তা নয়। যে সব রোগীর নানা অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা দরকার, তাঁদের তালিকা হাসপাতালগুলোর কাছে থাকে। একটি কমিটি সেই তালিকা দেখে গ্রহীতা বাছাই করেন। এর পরে অঙ্গ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করা হয়।
বেঙ্গালুরুর হাসপাতালের এক ডিরেক্টর জানান, সাম্প্রতিক অতীতে বেঙ্গালুরুতে একজন অঙ্গদানের পরে হৃদযন্ত্র বিমানে করে কলকাতায় আনিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। তেমনই, শিলিগুড়ি থেকে অঙ্গ বিমানে কলকাতায় পৌঁছনো সম্ভব। সেই পৌঁছনোর পথ মসৃণ করতেই সরকারি স্তরে গ্রিন করিডর তৈরি হয়ে থাকে।