২৫ বৈশাখের সকালে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে নৃত্যে করলা বাঁচানোর আবেদন জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জন্মদিনের দিন করলা নদী পরিষ্কারে উদ্যোগ নিল সমাজ এবং নদী বাঁচাও কমিটির সদস্যরা। তার আগে করলাকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্র সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে একটি অনুষ্ঠান করা হয়।
করলা নদী নিয়ে সমাজ এবং নদী বাঁচাও কমিটির সদস্যরা বহু দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
এখন করলা নদীর প্রয়োজন ফুরিয়েছে। দশমীর নিরঞ্জনে নৌকা নিয়ে বাইচ খেলা বন্ধ হয়েছে। তার বদলে নদীর ধারে গজিয়ে উঠেছে জঙ্গল। নদীর মধ্যে জমা হয় থার্মোকলের বাক্স। শহরের আবর্জনা পরে দূষিত হচ্ছে এই নদী। নাব্যতা হারিয়ে ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এই নদী।
রবিবার জলপাইগুড়ি শহরে বাবুঘাটে করলা নদী এবং রবীন্দ্রজয়ন্তীকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করা হয়। তারপর সাফাই অভিযানে নামে সমাজ এবং নদী বাঁচাও কমিটির সদস্যরা। একটি নৌকোয় দু’টি মাইক বেঁধে করলা নদীকে দূষিত না করার জন্য দুই পারের বাসিন্দাদের কাছে অবেদন করা হয়। সদস্যরা একটি নৌকা নিয়ে বাবুঘাট থেকে দিনবাজারের সেতু পর্যন্ত এলাকার আবর্জনা পরিষ্কার করে যেতে থাকেন।
শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া এত বড় এলাকা জুড়ে থাকা করলা নদীকে একদিনে পরিষ্কার করা সম্ভব না। তা সত্ত্বেও সমাজ এবং নদী বাঁচাও কমিটির সদস্যরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সমাজ এবং নদী বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যতদিন পর্যন্ত না সরকার থেকে করলাকে বাঁচানোর জন্য কোন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে। আজকে আমাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য এই পবিত্র দিনে বাসিন্দাদের সচেতন করা।”
রবিবার সকাল এগারোটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক আনন্দগোপাল ঘোষ এবং জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের প্রধানশিক্ষক ধীরাজ ঘোষ। আন্দগোপাল ঘোষ বলেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রকৃতিপ্রেমী ছিলেন। পদ্মা, মেঘনা, যমুনার টানে তিনি বার বার সেখানে যেতেন। কবির এই প্রকৃতিপ্রেমের প্রতি আজ এঁরা শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাচ্ছেন।’’