প্রতীকী ছবি।
প্রস্তুতি অনেকটাই এগিয়েছে। আগামী বছরে আরও ১০০ কোটির ছোট ও মাঝারি শিল্প কাজ করতে শুরু করবে কোচবিহারের চকচকায়। তা নিয়ে প্রশাসন তো বটেই, মন্ত্রী থেকে শুরু করে শিল্পদ্যোগীদের মধ্যে খুশির হাওয়া বইছে। জেলা শিল্পকেন্দ্র সূত্রের খবর, জুট পার্কের ৩০ একর জমিতে ওই কারখানাগুলি গড়ে উঠবে। প্রথমে ওই জায়গা শুধু জুটের জন্য নির্দিষ্ট করে রাখা হয়, কিন্তু তাতে কোনও সাড়া না পাওয়ায় পড়ে সেখানে অন্য শিল্পের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। সেখানে এ বারে রাইস মিল, ফ্রুট জুস, সয়াবিন, ডাল থেকে শুরু করে স্টিলের আলমারি তৈরির কারখানা তৈরি হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “শিল্পস্থাপনের দিকে লক্ষ্য রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে ক্ষেত্রে অনেক ছাড় দিয়েছেন। সেই সুফল আমরা পাচ্ছি।”
কোচবিহারে জেলাশাসক কৌশিক সাহা জানান, চকচকায় শিল্পস্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। খুব শীঘ্র পরিকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হবে। কোচবিহার জেলা শিল্পকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বিমল দাস বলেন, “ওই কাজ চলছে। জুট পার্কের জমিতে কারখানা হবে। সেখানে ৩০ একর জমি রয়েছে। তার মধ্যে ২৪ একরে কারখানা হবে। বাকি জায়গায় পুকুর ও রাস্তা রয়েছে।” শিল্পোদ্যোগীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ওই জায়গায় কারখানা করতে চেয়ে দীর্ঘ দিন আগেই আবেদন করেছিলেন। প্রথম দিকে সেখানে জুট পার্ক হবে বলেই নির্দিষ্ট ছিল। সেই জমি দেওয়া হয়নি। পরে অবশ্য প্রশাসন ও সরকার মত পাল্টে সেখানে অন্য কারখানা স্থাপনের অনুমতি দেয়। ওই কারখানা তৈরি হলে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে তাঁদের দাবি।
কোচবিহার ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সব মিলিয়ে ১০০ কোটির লগ্নি হচ্ছে চকচকায়। কয়েক হাজার পরিবারের কর্মসংস্থান হবে। আমরা চাইছি ব্লকে ব্লকে এমন শিল্প গড়ে উঠুক। সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে।” কোচবিহার জেলা ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সুকুমার সাহা জানান, ইতিমধ্যেই কয়েকজন জমি হাতে পেয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমিও একটা ডাল কারখানা তৈরি করব। আশা করছি আগামী বছরেই বেশিরভাগ কারখানা কাজ শুরু করতে পারবে।”
বাম আমলে ২০০১ সালে চকচকা শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠে। রাইস মিল, পাটজাত দ্রব্য, হাসকিং মিল, তুলোজাত সামগ্রী, বিস্কুট কারখানা, মশারি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তৈরির ৬৫ টি কারখানা গড়ে ওঠে। পরে আরও কয়েকটি কারখানা তৈরি হয়। কয়েক বছরের মধ্যে ওই শিল্পকেন্দ্র ধুঁকতে থাকেন। পনেরোটির বেশি কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা, থেকে আলো সব নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। জুট পার্কের নামে ৩০ একর জমি পরে থাকা নিয়েও সরব হন তাঁরা। এক শিল্পদ্যোগী বলেন, “এখন পরিস্থিতি আগের থেকে ভাল। তবে ৭ টি কারখানা বন্ধ আছে। তার মধ্যে একটি জুট কারখানা আছে। সেগুলি নিয়ে উদ্যোগ নিলে ভাল হয়।”