দত্তক দেওয়ার নাম করে জলপাইগুড়ির হোম থেকে যে শিশুদের বিক্রি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তাদের হদিশ সিআইডি জানে কি না, সে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। তারপরেই ওই এগারোটি শিশুকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে দাবি করল সিআইডি। গত রবিবার অভিভাবক সহ ওই শিশুগুলিকে জলপাইগুড়ির শিশু কল্যাণ সমিতির (সিডব্লিউসি) অফিসে নিয়ে আসা হয়। শিশুদের দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়ায় অনিয়ম রয়েছে বলে দাবি সিআইডির। তবে আপাতত ওই শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গেই রাখার নির্দেশ দিয়েছে সিডব্লিউসি। আদালতের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে বলে সিডব্লুউসি-র দাবি।
সিআইডি জানিয়েছে দিনহাটা, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করে এই শিশুদের খোঁজ মিলেছে। কোনও ক্ষেত্রে হোমের নথিতে অভিভাবকদের ঠিকানাও ভুল লেখা ছিল বলে দাবি। সে ক্ষেত্রে ঠিকানা খুঁজে পেতে সময় লেগেছে। আজ, বুধবার শিশু বিক্রি মামলার শুনানিতে চন্দনা চক্রবর্তী, জুহি চৌধুরী সহ ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। নতুন করে যাতে আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে না হয়, সে কারণে আগেভাগে শিশুদের চিহ্নিত করে সিডব্লুউসিতে নথিভুক্ত করানো হয়েছে বলে সিআইডি সূত্রে জানানো হয়েছে। গত সপ্তাহে মামলায় অভিযুক্তদের জামিনের শুনানি চলাকালীন জলপাইগুড়ির মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দেবপ্রিয় বসু সিআইডির তদন্তকারী অফিসারকে প্রশ্ন করেন, ‘‘বেআইনি কাজ যখন হয়েছে, তখন বাচ্চাগুলি উদ্ধার হবে কি?’’ সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার মনোজিৎ সরকার বিচারককে মাথা নেড়ে শুধু জবাব দিয়েছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, স্যার।’’ গত কয়েকটি শুনানিতে অভিযুক্তদের একাধিক আইনজীবীও একই প্রশ্ন তুলেছিলেন।
সিআইডি সূত্রের খবর, সম্প্রতি কলকাতা থেকে কোচবিহারের দিনহাটা পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় এগারোটি শিশুর সন্ধান পায় তারা৷ সিডব্লুউসি-র সদস্য সুবোধবাবু বলেন, ‘‘যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন, তাই ওই শিশুরা আপাতত যে অভিভাবকদের কাছে রয়েছে, সেখানেই রাখা হবে। তবে এটি নেহাতই অস্থায়ী ব্যবস্থা।’’
দত্তক দেওয়ার নাম করে শিশু বিক্রির অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে জলপাইগুড়ির একটি হোমের কর্ণধার চন্দনাদেবী, বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি দুই জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক দম্পতি মৃণাল ঘোষ এবং সস্মিতা ঘোষ সহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।