নুরুল ইসলাম কি আবার প্রার্থী, জানা যাবে আজ

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বারও ভোটে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম ফের প্রার্থী হতে চলেছেন। আজ, বুধবার দুপুরে জেলা বামফ্রন্টের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৩
Share:

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বারও ভোটে শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম ফের প্রার্থী হতে চলেছেন। আজ, বুধবার দুপুরে জেলা বামফ্রন্টের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভা ভোটের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।

Advertisement

তার আগে মঙ্গলবার দুপুরে দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমন্ডলীর জরুরি বৈঠক হয়। রাতে আরেক দফায় আলোচনার পর নুরুল ইসলামকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর একাধিক প্রবীণ সদস্য জানিয়ে দিয়েছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “সিপিএম এবার দলের সর্বোচ্চ স্তরের নেতাদের ভোটে লড়াই করতে নামাচ্ছে। বুধবারের তালিকায় তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।”

দলীয় সূত্রের খবর, নুরুলকে প্রার্থী করা হলেও কোনও ওয়ার্ড থেকে তিনি দাঁড়াবেন তা রাত অবধি পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি। এই অবস্থায় আজ, সকালে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে আরেক দফায় বৈঠকে বসতে চলছেন সিপিএম নেতারা। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সিপিএম জেলা নেতৃত্ব। এই প্রসঙ্গে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, “আমরা বুধবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করব। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে সমস্ত দিক আমরা খতিয়ে দেখে নিচ্ছি। অভিজ্ঞতা ছাড়াও মানুষের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তাঁদেরই প্রার্থী করা হয়েছে।”

Advertisement

সিপিএম সূত্রের খবর, রাত অবধি নুরুলের জন্য ১৮, ৪৫ নম্বরের মত একাধিক ওয়ার্ড বাছাই করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে সম্ভাব্য অন্য প্রার্থীদের সরিয়ে কী ভাবে তাঁকে টিকিট দেওয়া হবে তা স্পষ্ট নয়। টানা তিনবারের কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম বাম আমলে মেয়র পদ ছাড়াও ডেপুটি মেয়র-সহ একাধিক মেয়র পারিষদের পদ ছিলেন। গতবারের বোর্ডে তিনিই ছিলেন বিরোধী দলনেতা। তাহলে কেন তাঁকে টিকিট দেওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হল?

নুরুল-অনুগামীদের বক্তব্য, তিনি ১৯৯৪, ২০০৯ দুই দফায় ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন। একবার ২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। দুটি ওয়ার্ডই এবার সংরক্ষণের আওতায় রয়েছে। তাই নুরুল নিজের দীর্ঘদিন দেখভাল করা ওয়ার্ডগুলি থেকে আর দাঁড়ানো সম্ভব নয়। তাই তাঁকে প্রার্থী হতে গেলে অন্য ওয়ার্ড থেকে লড়াই করতে হবে। সেক্ষেত্রে পার্টির ‘কিছু’ সমস্যা থাকায় বিষয়টি দেরি হয়েছে। নুরুল অবশ্য বলেছেন, “প্রার্থী হওয়া বা না হওয়াটা পুরোপুরি দলের বিষয়। দলই ঠিক তা ঠিক করে। এই নিয়ে আমি কিছুই বলব না।” সিপিএম সূত্রের খবর, বামফ্রন্ট আমলে নুরুল ইসলাম মেয়র পদে থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে ‘উদ্ধত’ এবং ‘দুর্ব্যবহারে’র অভিযোগ উঠেছিল। বিশেষ করে ২০০৮ সালের ২৫ নভেম্বর মাসে প্রাক্তন মেয়র বিকাশ ঘোষের মৃত্যুর পর নুরুল মেয়র পদে বসার পর থেকে নানা মহলে ওই অভিযোগ ক্রমশ বেড়ে যায়। নুরুল এবং দলীয় নেতারা বিষয়গুলি ভিত্তিহীন বলে অবশ্য সেই সময় উড়িয়েও দিয়েছিলেন। এর পরে ২০০৯ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূলের জোট হয়।

সেখানে নুরুলকে সামনে রেখেই ভোটে লড়াই করে বামফ্রন্ট। পুরসভা থেকে ক্ষমতাচ্যূত হলেও তাঁকেই বিরোধী দলনেতা করা হয়। দলের একাংশের মতে, বিরোধী দলনেতা হিসাবে নুরুলর অনেক কাজকর্ম নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনাও হয়েছে। তাই অশোক ভট্টাচার্যের মত আড়াই দশকের রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে এবার তাই ময়দানে নামাতে হয়েছে সিপিএমের। কিন্তু নুরুল ইসলামকে পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়ার বিরোধিতায় সরব হয় দলের একটি মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement