ইসলামপুর কলেজে ভিড় বাড়ছে ছাত্রদের

কলেজের মধ্যেই গণ্ডগোলের জেরে ইসলামপুর কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। অবশেষে আতঙ্ক কাটিয়ে সোমবার থেকেই ছাত্রছাত্রীরা আসতে শুরু করেছে ইসলামপুর কলেজে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৭
Share:

চেনা ছন্দে ফিরছে কলেজ। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র

কলেজের মধ্যেই গণ্ডগোলের জেরে ইসলামপুর কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। অবশেষে আতঙ্ক কাটিয়ে সোমবার থেকেই ছাত্রছাত্রীরা আসতে শুরু করেছে ইসলামপুর কলেজে। এ দিন থেকেই কলেজের পরীক্ষার ফর্ম জমা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেই কারণে সকাল থেকেই ছিল ইসলামপুর কলেজে ভিড়। তবে ছাত্রছাত্রীদের দাবি, গণ্ডগোলের পরে কয়েকটি দিন পেরিয়ে গিয়েছে। আপাতত ছাত্র সংসদের নির্বাচনের প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে। কাজেই গণ্ডগোল হওয়ার আশঙ্কা না থাকায় কলেজে এসেছেন তাঁরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কলেজের গণ্ডগোলের পরেই ইসলামপুর কলেজের পরিচালন সমিতির বোর্ড ভেঙে ফেলার পাশাপাশি সরিয়ে দেওয়া হয় কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতিকে। তবে কলেজে পরিচালন সমিতি ভেঙে যাওয়ার ফলে কলেজের অনেক কাজই ব্যাহত হচ্ছে বলে কলেজ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। সোমবারই সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন ইসলামপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহ কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যরা। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌর ঘোষ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও নির্দেশ আসেনি। গৌরবাবু আরও বলেন, ‘‘সমস্ত বিষয় নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা যা জানাবেন, সেই হিসেবে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

কলেজ সূত্রে জানতে পারা গিয়েছে, কলেজের ছাত্র সংসদ বোর্ড গঠনের সময়ই তিনটি বর্ষেরই ফর্ম ভর্তি করা চলছিল। কিন্তু গণ্ডগোলের মধ্যে অনেকেই ফর্ম ভর্তি করতে যাওয়ার সাহস পর্যন্ত পায়নি। কাজেই সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাঁদের। শনিবার ছিল সেই ফর্ম ভর্তির শেষ দিন। তবে কত ছাত্র সেই ফর্ম ভর্তি করতে পারেননি, তা জানাতে পারেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ইসলামপুর কলেজের অধ্যক্ষ গৌরবাবু বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘গণ্ডগোলের কারণে ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম ভর্তির ক্ষেত্রে ছেদ পড়েছে তা জানি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলেই সেই বিষয়টি কী করা যায় তা ভাবা হচ্ছে।’’

Advertisement

ইসলামপুর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ইসলামপুর কলেজ। অন্য কোনও রাজনৈতিক দল ছাত্র সংসদ নির্বাচনে যোগ দিতে না পারলেও তৃণমূলের মধ্যেই গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসে। যদিও দলের নির্দেশেই এলাকার ছাত্র সংসদের আসনগুলি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয় ছাত্র সংসদের সদস্যরা। সে ক্ষেত্রে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানকে সামনে রেখেই আসনগুলি ভাগ করে নেয় তারা। কলেজের ৪৪টি আসনের মধ্যে ইসলামপুর বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবালকে অনুগামীদের দেওয়া হয় ৯টি আসন, হামিদুল রহমান অনুগামীদের ১২টি আসন, গোয়ালপোখরের জন্য ৫টি আসন, বাকি আসনগুলি প্রাক্তন মন্ত্রীর অনুগামী ছাত্রদের।

বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠনের দিনই প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী অনুগামী ছাত্র সংসদের সদস্যদের সঙ্গে এলাকার ইসলামপুর বিধায়ক কানাইয়ালাল অনুগামী ও চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ বাঁধে। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। কলেজের বেঞ্চ ভেঙে ফেলা হয়। এমনকি কলেজ মাঠেও দুই পক্ষ একে অপরের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসও ছোড়ে। এমনকি ইসলামপুরের অপ্সরা মোড়ে চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের জমিতে থাকা গুদামও পুড়িয়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। যদিও ঘটনার পর শুক্রবারই কলেজে পরিচালন সমিতি বৈঠক করে ইসলামপুর কলেজে। তার মধ্যেই কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতির পদ সহ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদ থেকেই সরিয়ে ফেলা হয় প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন