শিক্ষক সঙ্কটে দাড়িভিট, জীববিজ্ঞান পড়ানোর কেউ নেই

দাড়িভিট-কাণ্ডের পরও নতুন শিক্ষক চেয়েও মেলেনি। উল্টে স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষিক পরীক্ষা দিয়ে অন্য স্কুলে চলে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন দাড়িভিট হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৫
Share:

ইসলামপুরের দাড়িভিট স্কুল।—নিজস্ব চিত্র।

দাড়িভিট-কাণ্ডের পরও নতুন শিক্ষক চেয়েও মেলেনি। উল্টে স্কুলের জীববিদ্যার শিক্ষিক পরীক্ষা দিয়ে অন্য স্কুলে চলে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন দাড়িভিট হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

দাড়িভিটে গন্ডগোলের পর ছাত্রছাত্রীদের দাবি অনুযায়ী, স্কুলে নতুন শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার কথা জানানো হয়। প্রশাসনের নির্দেশে কোন বিষযে কত শিক্ষক দরকার, কত পদ ফাঁকা তাও বিস্তারিত জানানো হয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ১৯০০ পড়ুয়ার জন্য তাদের মাত্র ১৬ জন স্থায়ী শিক্ষক। ফলে আরও অন্তত ২১ জন শিক্ষক প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছিল। রাজ্য শিক্ষা দফতর এর মধ্যে বিভিন্ন স্কুলে নতুন শিক্ষক নিয়োগও করেছে। অথচ কোনও শিক্ষক মেলেনি দাড়িভিট স্কুলে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এরই মধ্যে স্কুলের জীববিদ্যার একমাত্র শিক্ষিক চন্দ্রানী চৌধুরী সম্প্রতি এসএসসি’র মাধ্যমে মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলে চলে গিয়েছেন। ফলে স্কুলে এখন জীববিজ্ঞানের কোনও শিক্ষকই নেই। এই পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু ভাবে স্কুল চালাতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। স্কুলের প্রশাসক এবং ইসলামপুরের মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি স্কুল শিক্ষা দফতরকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’

Advertisement

গত ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দাড়িভিট হাইস্কুল। গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মণ দুই তরুণের মৃত্যু হয়। আহত হয় দশম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব সরকার। ঘটনার পর থেকে স্কুল তালা বন্ধ করে ধর্নায় বসে নিহতদের পরিবার। প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডু এবং সহকারি প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদাকে সাসপেন্ড করে রাজ্য শিক্ষা দফতর। পরিচালন কমিটিও ভেঙে দেওয়া হয়। প্রশাসক হিসাবে বসানো হয় ইসলামপুরের মহকুমাশাসককে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাসপেন্ড থাকা অবস্থাতেই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক নরুল হুদা অবসর নিয়েছেন। স্কুল খোলার পর থেকেই স্কুলে যাচ্ছেন না অঙ্কের শিক্ষক সুদীপ্তকুমার সিংহ, রাষ্ট্রবিঞ্জানের শিক্ষক আসারুল হক, স্কুলের শিক্ষাকর্মী আসিফ ইকবালরা।

শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে ছিলেন প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ ও চন্দ্রানী। দু’জনের কেউ এখন নেই। অঙ্কের ক্লাস করানোর মতো শিক্ষকও নেই। পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাসের শিক্ষক নেই। কবে স্কুলে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে সেই দিকে তাকিয়ে কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডল বলেন, ‘‘শিক্ষকের সমস্যা রয়েছে। ওই শিক্ষিকা চলে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছিল।’’ স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলে মোট শিক্ষক সংখ্যা ছিল ১৬ জন। পাঁচজন ছিলেন প্যারাটিচার। দাড়িভিট-কাণ্ডের পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক সাসপেন্ড হন। স্কুলের অনুপস্থিত অঙ্কের শিক্ষক সুদীপ্ত সিংহ ও রাষ্ট্রবিঞ্জান শিক্ষক আসারুল হক। এখন স্কুল ছাড়লেন চন্দ্রানীও। এখন এতগুলো ক্লাস কে সামলাবেন, তা নিয়েই দুশ্চিন্তা বাড়ছে স্কুলে। অপরদিকে, এ দিন দাড়িভিট স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রীদের সাইকেল বিতরণ শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। দাড়িভিট-কাণ্ডের পর এই প্রথম ওই স্কুলে সাইকেল বিতরণ হচ্ছে বলেই স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন