স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ায় জেল স্বামীর, সাক্ষ্য দিলেন মেয়ে

স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামীকে ৭ বছরের সাজা শোনাল আদালত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামীকে ৭ বছরের সাজা শোনাল আদালত। দম্পতির কিশোরী মেয়ের সাক্ষ্যেই এই সাজা হল অপরাধীর। গত সোমবারই স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করেন জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা চতুর্থ কোর্টের বিচারক ইয়াসমিন আহমেদ। এ দিন তিনি এই সাজা ঘোষণা করেন। প্রায় সাড়ে ছয় বছর পরে ভক্তিনগর থানার এই মামলার নিষ্পত্তি হল। এই সময়ের পুরোটাই অভিযুক্ত জেলে কাটিয়েছেন।

Advertisement

দোষী সাব্যস্ত রতন রায় শিলিগুড়ি সংলগ্ন জলপাইগুড়ি জেলার দক্ষিণ শান্তিনগরের বাসিন্দা। তিনি প্রায়ই তার স্ত্রী কল্পনার ওপর নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ। ২০১২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় কল্পনাদেবীর।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্বশুরবাড়ির গোয়ালঘর থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পরদিন মৃতার ভাই রমানাথ দাস ভক্তিনগর থানায় বোনের স্বামী রতন এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। রমানাথবাবুর অভিযোগ ছিল, প্রথমে তার বোনকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এর পর আত্মহত্যা প্রমাণ করতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। রতন এবং তাঁর মাকে তখন গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মা জামিনে মুক্তি পান। রতন সংশোধনাগারে বন্দি থাকা অবস্থাতেই বিচার চলে।

Advertisement

প্রায় সাড়ে ছয় বছর এই মামলার বিচার চলে। ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। যদিও আদালতে খুনের অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। তার বদলে স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবী তপন ভট্টাচার্য জানিয়েছে, অভিযুক্তের কিশোরী মেয়ে বাবার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়। এই সাক্ষ্য মামলার বিচারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত সোমবার বিচারক তাঁর রায় ঘোষণা করেন। রতন রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। তবে তথ্যপ্রমাণের অভাবে রতনের মাকে বেকসুর মুক্তি দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার রতনকে বধূ নির্যাতনের দায়ে এক বছর এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার জন্য সাত বছর সাজা দেন বিচারক। তবে এই দুটি সাজাই একসঙ্গে কার্যকর হবে। পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের অতিরিক্ত সাজা দেওয়া হয় অভিযুক্তকে।

সরকার পক্ষের আইনজীবী তপন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, যে হেতু অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই ৬ বছর ৭ মাস সংশোধনাগারে বন্দি। তাই সেই সময়টা তার সাজা থেকে বাদ যাবে।

অভিযুক্তের আইনজীবী শিবশংকর দত্ত জানিয়েছেন,যে হেতু রতন রায় সাজার অনেকটাই কাটিয়ে ফেলেছেন, কয়েক মাস পরেই তিনি মুক্তি পাবেন। তাই তাঁরা আর উচ্চ আদালতে আপিল করবেন না।

এ দিকে রায় শোনার পর মৃতার দাদা রমানাথ দাস জানিয়েছেন, বিচার ব্যবস্থার প্রতি তার আস্থা আছে। সঠিক সাজা হয়েছে। কিন্তু বোনের ছেলেমেয়েরা অকালে মাকে হারাল সে ক্ষতি আর পূরণ হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন