প্রতীকী ছবি।
চলতি বছরের জুলাইয়ে উত্তরকন্যায় জলপাইগুড়ি জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে একশো দিনের কাজের সংখ্যা বাড়ানো যায়। সেই ঘটনার মাস চারেক পরে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পাওয়ার হিসেবে রাজ্যের গড়ের থেকেও পিছিয়ে রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা। এমনকি গোটা উত্তরবঙ্গে উত্তর দিনাজপুর ছাড়া বাকি জেলার গড় জলপাইগুড়ির চেয়ে বেশি।
রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, শুধু কাজের দিনের হিসেবে নয়, মহিলাদের কাজে যোগ দেওয়ার নিরিখেও পিছিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা। চলতি মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যে পরিবার পিছু গড়ে কাজ দেওয়া হয়েছে ৫৫ দিন। সেখানে জলপাইগুড়িতে গড় কাজের দিন মাত্র ৪১। মালদহে এই সংখ্যা ৫৮, কোচবিহারে ৪৬। দার্জিলিং পাহাড়ি এলাকা এবং কালিম্পঙের গড় দিনের সংখ্যাও জলপাইগুড়ি থেকে বেশি।
যদিও একশো দিনের কাজের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুনীল অগ্রবাল বলেন, “দিন সংখ্যা কম এটা ঠিক। তবে আমাদের জেলায় বেশি সংখ্যক লোককে কাজ দেওয়া হয়েছে। নতুন জবকার্ড করেও কাজ দেওয়া হচ্ছে।” বেশি সংখ্যক লোককে কাজ দেওয়ায় কাজের দিনের গড় সংখ্যা কম হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসনের এই দাবি মানতে নারাজ শাসক দলের একাংশই। সূত্রের খবর, তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা অনেকেই একশো দিনের কাজের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন।
সম্প্রতি তৃণমূলের এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে একশো দিনের কাজ নিয়ে জেলাস্তরের এক আধিকারিকের কথা কাটাকাটিও হয়েছে বলে খবর। সে সময় অন্য আধিকারিকরাও ছিলেন। জনপ্রতিনিধির অভিযোগ ছিল, যাঁরা নতুন জবকার্ড পাচ্ছেন তাঁদের কাজ না দিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই লোককে কাজ দেওয়া হচ্ছে। প্রধান বা সভাপতিদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, তার জেরেই নতুন লোক কাজ না পাওয়ায় দিনের সংখ্যা বাড়ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন জনপ্রতিনিধিদের একাংশ।
জলপাইগুড়ি জেলায় মহিলাদের একশো দিনের কাজে যোগদান মাত্র ৪৭ শতাংশ। সেটা কোচবিহারে ৬১ শতাংশ এবং আলিপুরদুয়ারে ৫১ শতাংশ। জেলা প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাবেই কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলারা পিছিয়ে রয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ বলেন, “একশো দিনের কাজ নিয়ে জেলা পরিষদ স্তরে পর্যালোচনা চলছে। প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে আর্জি জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন গ্রামের সকলে যেন কাজ পায়, এটা আমাদের সকলকেই মাথায় রাখতে হবে।”