বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র
এক লাফে ১২৪ কোটি টাকার বাজেট বাড়াল জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার বিরোধী শূন্য জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের বিনা বাধায় পাশ হয়েছে বাজেট প্রস্তাব। জেলা পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী এক বছর রাজ্য সরকারের থেকে বিপুল বরাদ্দ মিলবে আশা করেই বাজেটের অঙ্ক দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ানো হয়েছে। সাম্প্রতিক কালে একশো কোটি ছাড়ানো বাজেট প্রস্তাব জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদে ব্যতিক্রম। গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের ক্ষমতা দখল করেছিসল বামেরা। সে সময় তাদের অভিযোগ ছিল রাজ্য সরকার বঞ্চনা করছে, টাকা দিচ্ছে না। তখন বাজেট প্রস্তাব হয় ৮১ কোটি টাকার। এ বারে ২০৫ কোটি টাকার বাজেট হয়েছে।
এ দিন আরও দু’টি নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে পরিষদ। নিজের সম্পত্তি তথা জমি হাট ইত্যাদির হিসেব রাখার জন্য একটি সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু হতে চলেছে। কোন ফাইল কোথায় আটকে রাখা হয়েছে তার জন্য ‘ট্র্যাকিং সিস্টেম’ও চালু হতে চলেছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা বর্মণ বলেন, “বাজেটে অনেক খাতের আয় কম করে ধরা হয়েছে। বছরের শেষে দেখা যাবে আরও বেশি কাজ করতে পেরেছি।”
জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, বাজেট প্রস্তাবে আয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছে মূলত গ্রামীণ এলাকা উন্নয়ন তহবিল তথা আরআইডিএফ প্রকল্প এবং কয়েকটি নিজস্ব তবহিল থেকে। আরআইডিএফে বরাদ্দ করে নাবার্ড। রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে সেই টাকা আসে। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ তৃণমূল শুধু দখল করেনি, বিরোধী শূন্য করেছে। মাসখানেক আগে জেলা পরিষদের সব সদস্য পঞ্চায়েত মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বিপুল বরাদ্দের আশ্বাস নিয়ে এসেছেন বলে জেলা পরিষদ সূত্রে খবর।
জেলা পরিষদের কাজে গতি আনার কথাও বাজেটে আলোচনা হয়েছে। সে জন্য নেওয়া হবে প্রযুক্তির সাহায্য। জেলা পরিষদের নিজস্ব জমি দখল হয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক তদন্ত কমিটি হয়েছে। এ বার থেকে সেই জমি ও হাটের হিসেব সেখান থেকে পাওয়া আয়ের খুঁটিনাটির জন্য বিশেষ সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সারা হবে। কোনও জমির রেকর্ড দেখতে হলে পুরনো ফাইল খোঁজার প্রয়োজন আর নেই বলে দাবি করা হয়েছে। সঙ্গে ফাইল ট্র্যাকিং সিস্টেমও চালু হচ্ছে। কোন ফাইল কখন কোন টেবিলে যাচ্ছে তা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। কোনও টেবিলে বেশিদিন ফাইল আটকে থাকলে সে খবরও পৌঁছে যাবে আধিকারিকদের কাছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসেই চালু হয়ে যাবে ওই ব্যবস্থা। বিষয়টির পরিকল্পনা করেছিলেন সহকারী সভাধিপতি দুলাল দেবনাথ। তিনি বলেন, “জেলা পরিষদের কাজকর্মে পেশাদারি মনোভাব আনতে না পারলে কাজে গতি আসবে না। তাই বেশকিছু নতুন পরিকল্পনা হয়েছে।”