রাম রহিমের আস্তানায় প্রবীণ কুশীলবেরা

নবজ্যোতি অপেরার কর্তা, প্রবীণ শিক্ষক সুনীল ঘোষ বলেন, “আমার ৬০ বছর বয়স। ছোট থেকে যাত্রা, নাটকের প্রতি টান। চুটিয়ে অভিনয় করতাম। সেই শখেই এ বার পালা করছি।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:২০
Share:

প্যারোলের আর্জি জেলবন্দি রাম রহিমের। —ফাইল চিত্র।

এ বার শীতে ‘রাম রহিমের আস্তানা’ দেখার সুযোগ মিলবে কোচবিহারে। রাস উৎসবের মুখে ওই যাত্রাপালা মঞ্চস্থ করার প্রস্তুতিতে নেমেছেন একদল প্রবীণ বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই মহড়া শুরু করেছেন তাঁরা। অভিনেতা, অভিনেত্রী সহ অন্য কুশীলবদের তালিকায় অবশ্য কম বয়সীরাও অনেকে আছেন। নবজ্যোতি অপেরার ব্যানারে রোজ সন্ধেয় শহরের স্টেশন মোড় এলাকায় মহড়া হচ্ছে।

Advertisement

নবজ্যোতি অপেরার কর্তা, প্রবীণ শিক্ষক সুনীল ঘোষ বলেন, “আমার ৬০ বছর বয়স। ছোট থেকে যাত্রা, নাটকের প্রতি টান। চুটিয়ে অভিনয় করতাম। সেই শখেই এ বার পালা করছি।” কুশলীবদের তালিকায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী থেকে হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনেকেই আছেন যাঁদের গড় বয়স ৫০ বছরের বেশি। সকলেরই অভিনয়ের দারুণ শখ। শীতে শহরের রবীন্দ্র ভবনে পালাটি মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সুযোগ হলে রাসমেলার কোনও অনুষ্ঠানে পালাটি মঞ্চস্থ করতেও তাঁরা আগ্রহী।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, পালার নামের সঙ্গে ‘ধর্ষক বাবা’র সাম্প্রতিক ঘটনার মিল যতই আকর্ষণীয় হোক, পালার কাহিনির সঙ্গে তার মিল নেই। যাত্রার কাহিনিটি এগিয়েছে নিজেদের আসল নাম বদলে রাম ও রহিম নামে পরিচিত হয়ে ওঠা দু’জনের অপরাধ জগতের কাজকর্ম নিয়ে। তুলে ধরা হয়েছে ড্রাগ কারবার, নারী পাচারের মতো নানা ঘটনা। প্রায় দু’ঘণ্টার ওই যাত্রাপালার কাহিনি, সংলাপ সবই সুনীলবাবুর তৈরি।

Advertisement

কুশীলবদের তালিকায় নাম রয়েছে জয়ব্রত মজুমদার, অজিত সরকার, বরুণ মৈত্রী, দেবাশিস সাহা, কান্তেশ্বর বর্মন, দুলাল দে সরকার, অসীম কুমার পাল, সুরঞ্জন দে, জয়ন্তী প্রামাণিক, নির্মলা পোদ্দার প্রমুখের নাম রয়েছে। চাকরি সূত্রে মালদহে থাকেন বরুণবাবু। তিনি বলেন, “ছুটির দিনে মহড়া দিতে ছুটে আসছি। তা ছাড়া যাত্রা করব বলে সারা বছরের বেশ কয়েকটা ক্যাজুয়াল লিভও জমিয়ে রেখেছি।” গৃহবধূ জয়ন্তী প্রামাণিক বলেন, “ছোটবেলায় নাটক করতাম। বিয়ের পর সংসারের চাপে সে সব বন্ধ হয়ে যায়। এ বার পরিবারের উৎসাহে যাত্রার অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে দারুণ লাগছে। টাটকা বাতাসের মতো।”

এই উদ্যোগে খুশি প্রবীণ কুশীলবদের পরিজনদেরও অনেকেই। তাঁদের কয়েক জনের কথায়, ‘‘সারা জীবন সংসারের ঘানি টেনেছেন ওঁরা। একঘেয়েমি কাটিয়ে পুরনো দিনের আনন্দে ফিরতে দেখা বড় প্রাপ্তি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন