রক্ষাকর্তা: রক্ত দিলেন যুগ্ম বিডিও। —নিজস্ব চিত্র।
রক্তের প্রয়োজনে তিন দিন আগে মালদহের চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক মহিলা। কিন্তু হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে তাঁর গ্রুপের রক্ত ছিল না। তবু তিনি হাসপাতালেই পড়ে ছিলেন, যদি কোনও ভাবে মেলে রক্ত। শেষে সেই বধূ, রেখা দাসের ত্রাতা হয়ে এলেন চাঁচলের বাসিন্দা তথা মাথাভাঙা ব্লকের জয়েন্ট বা যুগ্ম বিডিও সম্বল ঝা। তাঁর দেওয়া রক্তেই আপাতত প্রাণ বাঁচল রেখার।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিন দিন আগে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত আটগারার বধূ রেখা দাস হাসপাতালে ভর্তি হন। তার ‘এ পজিটিভ ’রক্তের প্রয়োজন ছিল। ব্লাড ব্যাঙ্কে সেই গ্রুপের রক্ত ছিল না। দাতাও মিলছিল না। বিষয়টি বন্ধুদের মাধ্যমে কানে যায় সম্বলের। মঙ্গলবার রাতেই তিনি হাসপাতালে গিয়ে সুপারের সঙ্গে দেখা করে সব ব্যবস্থা করেন। তার পরে রক্ত দেন ওই বধূর জন্য।
কিন্তু সকলের ভাগ্য তো রেখার মতো নয়। সম্বলের দেখা সকলে পান না। রক্তের প্রয়োজনে এমন যে বহু মানুষ রোজ হাসপাতালে আসছেন, তাঁরা তা হলে কী করবেন? এর সদুত্তর নেই চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। তিনি বলেন, ‘‘গরমের সময় রক্তের কিছুটা হলেও সঙ্কট দেখা দেয়। তাই এই সময়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে সরকারি, বেসরকারি সংগঠনগুলি। কিন্তু এ বার ভোটের জন্য শিবির হয়নি। এখন নির্বাচন মিটেছে। তার পরেও তেমন ভাবে রক্তদান শিবির হচ্ছে না। তাই সঙ্কট চলছেই।’’ একই সঙ্গে সম্বলের রক্তদানকে সাধুবাদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যুগ্ম বিডিওর মতো দাতারা ব্যক্তিগতভাবে এগিয়ে এলে সমস্যা কিছুটা হলেও দূর হবে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রক্তের সমস্যায় শুধু থ্যালাসেমিয়া রোগীরাই নন, সমস্যায় পড়তে হচ্ছে হাসপাতালে ভর্তি প্রসূতিদেরও। রক্তের সমস্যায় তাদের অনেককেই মালদহে রেফার করা হচ্ছে। দিন কয়েক আগে শিবির করে নিজেরাই রক্ত দেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু হাসপাতালে রোজ গড়ে ১০ জন প্রসূতির সিজার ও ৩০ জনের সাধারণ প্রসব হয়। তাঁদের অনেকেরই রক্তের প্রয়োজন হয়। তাই যেটুকু রক্ত ছিল, তা-ও শেষ। এই অবস্থায় যুগ্ম বিডিওর মতো দাতারা ব্যক্তিগতভাবে এগিয়ে এলে সমস্যা কিছুটা মিটত, জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।