ভয় পাবেন না, বার্তা দুই মন্ত্রীর

এ কথা শুনে শুভেন্দু তাঁদের বলেন, ‘‘আপনারা রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সংশোধন বা জমির নথি সংগ্রহের জন্য বিএলএলআরও অফিসে ছোটাছুটি করবেন না। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক, এ রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি হচ্ছে না। আপনারা নিশ্চিন্তে এবং নির্ভয়ে থাকুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন।’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪১
Share:

আবেদন: মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে এনআরসি আশঙ্কার কথা। বৃহস্পতিবার কালিয়াগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার দুপুর। গাড়ি থেকে নেমে নির্বাচনী প্রচারসভার মঞ্চে সবে উঠতে যাচ্ছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মঞ্চের সিঁড়ির সামনে আচমকা কয়েক জন দুই মন্ত্রীর সামনে দাঁড়ালেন। তাঁদের মধ্যে কৃষক রফিকুল ইসলাম, ভুটভুটি চালক মানব দেবশর্মা বললেন— ‘‘স্যার, আমাদের পূর্বপুরুষেরা ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ থেকে কালিয়াগঞ্জে এসে বসবাস করছেন। এখন শুনছি এনআরসি লাগু হলে ১৯৫১ না হয় ১৯৭১ সালের আগের জমির দলিল দেখাতে হবে। না পারলে নাকি নাগরিকত্বের অধিকার থাকবে না। আমাদের ধরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে। খুব আতঙ্কে রয়েছি স্যার। কিছু করুন।’’

Advertisement

এ কথা শুনে শুভেন্দু তাঁদের বলেন, ‘‘আপনারা রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সংশোধন বা জমির নথি সংগ্রহের জন্য বিএলএলআরও অফিসে ছোটাছুটি করবেন না। বিজেপি যতই চেষ্টা করুক, এ রাজ্যে কোনও ভাবেই এনআরসি হচ্ছে না। আপনারা নিশ্চিন্তে এবং নির্ভয়ে থাকুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন।’’ আর রাজীবের আশ্বাস, ‘‘এ রাজ্যে এনআরসি রুখতে তৃণমূল এক নদী রক্ত দিতেও প্রস্তুত রয়েছে।’’

এ দিন কালিয়াগঞ্জের বোচাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের তরঙ্গপুর শ্মশানমাঠে বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহের সমর্থনে জনসভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেখানেই দুই মন্ত্রীর সামনে এনআরসি নিয়ে বাসিন্দাদের এমনই আতঙ্কের ছবি সামনে এল।

Advertisement

মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এনআরসি নিয়ে শুভেন্দু, রাজীব ও রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি এক সুরে বললেন— ‘‘কালিয়াগঞ্জে তৃণমূলকে হারাতে গোপনে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম। তাই কংগ্রেস ও সিপিএমের নির্বাচনী প্রচারে এনআরসির বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য নেই।’’

এ দিন তপনের সমর্থনে কালিয়াগঞ্জের বীরঘই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজিতপুর এলাকাতেও নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার পরে গত ছ’মাসে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ কোনও উন্নয়নের কাজ করেননি। কংগ্রেস ও সিপিএম একজোট হয়ে বিজেপি বিরোধী ভোট তৃণমূলের বিপক্ষে করানোর চেষ্টা করছে। তৃণমূল বাদে এনআরসির প্রতিবাদে কারও কোনও আন্দোলন নেই। কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল জয়ী হলে রাজ্য সরকার ১৫ দিনের মধ্যে ২৭০টি বুথের বাসিন্দার কাছ থেকে উন্নয়নের প্রস্তাব নিয়ে কাজ শুরু করবে।’’

এ নিয়ে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি নির্মল দামের বক্তব্য, ‘‘সারদা, নারদা, চিটফান্ড ও কাটমানি কাণ্ডে জড়িতদের কোনও কথার গুরুত্ব দিচ্ছে না বিজেপি। এনআরসি কার্যকর হলেও কালিয়াগঞ্জের বৈধ নাগরিকদের কোনও সমস্যা হবে না।’’

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন— ‘‘কালিয়াগঞ্জের মানুষ তৃণমূলকে প্রত্যাখান করেছেন। তাই ওই দলকে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন