অবশেষে আজ থেকে কাঞ্চনকন্যা

কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠেছে, যে ট্রেনে চেপে ডুয়ার্সের অধিকাংশ মানুষ যাতায়াত করেন, সেটি এত দিন ধরে বন্ধ রাখা হল কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

অবশেষে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হল কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসকে।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ ও অসমের যে ট্রেনগুলি দক্ষিণবঙ্গে যায়, কাঞ্চনকন্যা-সহ সেই সব ট্রেনকে গত রবিবারে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভের পরে। রেলের দাবি, সেই সময়ে কয়েকটি স্টেশনে গোলমাল হয় এবং রেলের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই সময়ে সিগন্যালিং ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোতেও আঘাত হয় বলে রেলের অভিযোগ। সেগুলি সারিয়ে তুলতে সময় লাগবে বলে রেল প্রথম থেকেই জানাচ্ছিল। একই সঙ্গে বুধবার থেকে কিছু কিছু করে ট্রেন চালুও করা হচ্ছিল। সেই ভাবে দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, উত্তরবঙ্গও চালু হয়েছিল। এ বারে আপ আর ডাউন কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস চালু করার সিদ্ধান্তও নিল রেল।

কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠেছে, যে ট্রেনে চেপে ডুয়ার্সের অধিকাংশ মানুষ যাতায়াত করেন, সেটি এত দিন ধরে বন্ধ রাখা হল কেন? ওই সব অঞ্চলের মানুষজন এবং ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়ীদের কথায়, এর ফলে এক দিকে যেমন শীতের মরসুমে পর্যটন ব্যবসা জোর ধাক্কা খেয়েছে, অন্য দিকে সেই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত খরচও অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। এ দিন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শুভানন চন্দ বলেন, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি আগে চালানোর ব্যবস্থা করছি আমরা। ওই লাইন দিয়ে ট্রেনের সংখ্যা কিছু কম রয়েছে। লাইন এবং আনুষঙ্গিক মেরামতি করতে আরও দু’সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’’

Advertisement

রেল সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। তার ফলে একে একে দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেসের মতো উত্তর ও দক্ষিণকে সংযোগকারী ট্রেনগুলি চালানো শুরু হয়েছে। তবে কাঞ্চনকন্যা ট্রেনটি না চলায় যে ডুয়ার্সের মানুষ ও পর্যটকদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে, তা রেলেরও অনেকে মেনে নিয়েছেন। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পর্যটনের মরসুমে কোন ট্রেনগুলি চললে যাত্রীরা সুবিধা পাবেন, তা আগেই ভেবে দেখা উচিত ছিল রেলের।’’ পর্যটন ব্যবসায়ীদের একটি অংশের কথায়, রেল আগে ভেবে দেখলে মরসুমের গোড়ার দিকের বুকিংগুলি বাতিল হত না।

কাঞ্চনকন্যা ছাড়াও দিল্লি থেকে এনজেপি হয়ে আলিপুরদুয়ার জংশনের মধ্যে চলাচলকারী সিকিম মহানন্দা এক্সপ্রেস ডুয়ার্সের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলি হয়ে যাতায়াত করে। তবে শিলিগুড়ি জংশন থেকে শিলিগুড়ি-নিউ বঙ্গাইগাও প্যাসেঞ্জার, শিলিগুড়ি- আলিপুরদুয়ার জংশন এবং শিলিগুড়ি-বামনহাট ট্রেনগুলি ডুয়ার্স হয়ে চলাচল করে। শিয়ালদহ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং তিস্তা তোর্সা এক্সপ্রেস ডুয়ার্সের একটি অংশ ধূপগুড়ি এবং ফালাকাটা হয়ে যায়। তিস্তা-তোর্সা শুক্রবার পর্যন্ত বাতিল ছিল বলে যথেষ্ট অসুবিধায় পড়েন যাত্রীরা।

গত রবিবার থেকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এলাকায় এবং পূর্ব রেলের এলাকায় বেশ কিছু গোলমাল অশান্তি হয়েছিল। তবে তা ধীরে ধীরে কমে আসছে বলেই ইঙ্গিত।

বৃহস্পতিবার বারসই জংশনে বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছিল। যদিও, শুক্রবার নতুন করে কোথাও অশান্তি ছড়ায়নি বলে রেল সূত্রে দাবি।এদিন পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নাগরিকত্ব বিরোধী সমাবেশ কার্শিয়াং স্টেশনের পাশে হলেও তার কোনও প্রভাব ট্রেন চলাচলের উপর পড়েনি বলে দাবি করা হয়েছে দার্জিলিং হিমালয়ান রেল সূত্রে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন