আবেগ উস্কে ভোট টানার চেষ্টা রিজিজুর

তৃণমূলের বিরুদ্ধে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগ তুলে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করার ডাক দিলেন বিজেপি নেতা কিরেণ রিজিজু। শনিবার কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে দলের জনসভায় যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিজিজু। নিজের বক্তব্যে রিজিজু বারবারই কোচবিহারের কথা বলে স্থানীয় আবেগকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ০২:৫৫
Share:

রাসমেলার মাঠে সভায় কিরেণ রিজিজু। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

তৃণমূলের বিরুদ্ধে অরাজক পরিস্থিতি তৈরির অভিযোগ তুলে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করার ডাক দিলেন বিজেপি নেতা কিরেণ রিজিজু। শনিবার কোচবিহার রাসমেলা ময়দানে দলের জনসভায় যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রিজিজু।

Advertisement

নিজের বক্তব্যে রিজিজু বারবারই কোচবিহারের কথা বলে স্থানীয় আবেগকে ছোঁয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, কোচবিহার উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে যাওয়ার ‘ফটক’। এই জায়গার উন্নয়ন না হলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলেও তিনি দাবি করেন। তাঁর কথায়, “স্বাধীনতার এত বছর পরেও উত্তরবঙ্গ সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি উন্নয়নের ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। কোচবিহার ঐতিহাসিক জায়গা। একসময় এই জায়গার নাম চারদিকে ছিল। অসমের তিনসুকিয়া আর এখানকার কোচবিহার তখন ধনী শহর বলেও পরিচিত ছিল। এখন আর কিছু নেই। কোচবিহারের ঐতিহ্য ফেরাতে বিজেপি সরকার দরকার।”

এ দিন বিজেপির সভায় দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের উপস্থিত থাকার কথা ছিলেন। কিন্তু তিনি শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়ার থাকায় তিনি এ দিনের জনসভায় উপস্থিত হতে পারেননি। তাঁর প্রতিনিধি হয়েই কিরেণ রিজিজু ওই সভায় যোগ দেন। সভা মাঠে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সংখ্যা সামান্যই ছিল। মাঠ ভরে ছিল গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। তাঁদের নেতা অনন্ত রায় ওই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। প্রথম থেকে বিজেপি বক্তারা গ্রেটারের দাবিপূরণে একাধিক আশ্বাস দেওয়ার কথা বলতে থাকেন। সুরেন্দ্র অহলুওয়ালিয়া কামতাপুরী ভাষার স্বীকৃতি এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নারায়ণী সেনার (রাজ আমলে ওই নামে সেনা ছিল কোচবিহারে) অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সওয়াল করেন। কোচবিহারের ‘বীর চিলা রায়’ কেন পাঠ্যসুচিতে নেই তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। তিনি বলেন, “বাম ও তৃণমূল রাজ্যে কোনও কাজ করেনি। এলাকার উন্নয়নের জন্য নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করতে হবে।”

Advertisement

তৃণমূল-বাম দু’জনকেই একসুরে বিঁধেছেন রিজিজু। তিনি বলেন, “ছোটবেলায় শুনতাম পশ্চিমবঙ্গে বামেরা অত্যাচার চালাচ্ছে। সব জায়গায় গুন্ডামি চলছে। এখন তৃণমূল এই কাজ করছে। এদের রাজ্য রাখলে উন্নতি হবে না। বিজেপিকে নিয়ে আসতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, বাম-কংগ্রেস এবং তৃণমূল রাজ্যের উন্নয়ন স্তব্ধ করে দিয়েছে। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির আরেক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। তিনি অবশ্য বক্তব্য রাখেননি। পরে তিনি দাবি করেন, ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সায়েন্টিফিক রিগিং হয়। বাম আমলেও তা শুরু হয়েছে। তৃণমূলও তা করছে। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে নির্বাচন কমিশনকে আরও উন্নতি করতে হবে।” পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, এ দিনের নির্বাচনে কমিশন ভাল কাজ করেছেন। তিনি বলেন, “আরেক দফা নির্বাচন বাকি আছে। তার আগেই অবশ্য স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার রাজ্য থেকে যাচ্ছে। ভবানীপুরেও তিনি হারছেন। ওই কেন্দ্রে থেকে বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র বসু জয়ী হবেন।”

এ দিন মঞ্চে থাকা গ্রেটার নেতা অনন্ত রায় জানান, তাঁরা বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করছেন। গ্রেটারের রাজ্যের দাবি অবশ্য বিজেপি সমর্থ করেনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ সিংহ বলেন, “তৃতীয় শ্রেণির রাজ্যের বিষয়টি এখন সংবিধানে নেই। ওই দাবি বাদে তাঁদের যা দাবি আছে তা পূরণে উদ্যোগের কথা আগেই জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন