কৃষ্ণ ভর্তি হল হাসপাতালে

অবশেষে নড়েচড়ে বসলেন প্রশাসনের কর্তারা। জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হল কিশোর কৃষ্ণ ও তার মাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৬ ০৭:৪৮
Share:

হাসপাতালে মায়ের কোলে কৃষ্ণ। — নিজস্ব চিত্র

অবশেষে নড়েচড়ে বসলেন প্রশাসনের কর্তারা। জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হল কিশোর কৃষ্ণ ও তার মাকে। এই কিশোরকে বেশ কয়েক বছর ধরে রাস্তার ধারের একটি খুঁটিতে বেঁধে কাজে যেত তার মা। সে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে টনক নড়ে প্রশাসনের। আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক দেবীপ্রসাদ করণম বলেন, “মা ও শিশুটিকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে চিকিৎসা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।

Advertisement

স্বামী ছেড়ে যাওয়ায় কৃষ্ণের মা ছোট ছেলেকে নিয়ে আলিপুরদুয়ার শহরের লোহার পুল এলাকায় বাপের বাড়িতে এসেছিলেন। বছর দুয়েক ধরে সেখানে ছিলেন। পড়শিরা জানাচ্ছেন, বাপের বাড়িতে তিনি ভাল ছিলেন না। পড়শিদের অনেক বলার পর ছোট একটি ভাঙা ঘর দেওয়া হয় তাঁকে থাকতে। অসুস্থ শিশুর চিকিৎসা কী ভাবে করাবেন ভেবেই পাচ্ছিলেন রিনাদেবী।

দিনের শেষে শিশুর মুখে দুমুঠো খাবার দেওয়ার জন্য তাঁকে দিনের বেলায় কাজের সন্ধানে এদিক ওদিক ভবঘুরের মতো ঘুরতে হত। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, আগে শিশুটি তখন রাস্তায় চলন্ত গাড়ির সমানে চলে আসত। কখনও পড়ে যেত নর্দমায়। তবে পরিবারের তরফে সেরকম সহযোগিতা মিলত না। তাই বাধ্য হয়ে শিশুকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে খাবারের খোঁজে বের হতেন ওই মহিলা। তখনই তা চোখে পড়ে সকলের।

Advertisement

আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মন জানান, কৃষ্ণকে শিশু বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখানে রয়েছেন রিনাদেবীও। প্রথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, শিশুটির মানসিক সমস্যা রয়েছে। মানসিক রোগের চিকিৎসক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা শিশুটিকে দেখছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হবে।

আলিপুরদুয়ার মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় জানান, বেশ কয়েক মাস ধরে শিশুটিকে বেঁধে মা চলে যেত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মানা করলেও শুনত না। সংবাদপত্রে বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় আমরা বিষয়টি লিখিত ভাবে জেলা প্রশাসনকে জানাই। জেলাশাসক নিজে উদ্যোগে ওদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। শনিবার মা ও শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রশাসনের আধিকারিকরা।’’

আলিপুরদুয়ার হাসপতালে গিয়ে দেখা গেল শিশু বিভাগে মায়ের কোলে বসে রয়েছে কৃষ্ণ। রিনা জানান, প্রশাসনের কর্তারা তাঁদের গাড়ি করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। চিকিৎসরা দেখেছেন। শিশুকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন