দুই জেলায় জমি দখলের অভিযোগ

কালীপুজো করার নামে ক্লাব ঘর তৈরি করে বর্গাদার চাষির কেনা এক ফালি জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫২
Share:

ময়নাগুড়িতে ভাঙা হচ্ছে অবৈধ নির্মাণ। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

কালীপুজো করার নামে ক্লাব ঘর তৈরি করে বর্গাদার চাষির কেনা এক ফালি জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন থানার তেলিঘাটা এলাকার ওই ঘটনার পর পুলিশের কাছে লিখিত নালিশ জানিয়েও ওই বর্গাদার হরিশঙ্কর মাল্লা কোনও ফল পাননি। বরং ওই তৃণমূল সমর্থকদের একাংশ তাঁকে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। তপনের বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, ‘‘ওই বর্গাদার নালিশ জানাতে এসেছিলেন। তবে ওই জমিটি কেনা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ওই বর্গাদারের বিবাদ ছিল। দু’পক্ষকে বসে বিরোধ মেটাতে বলেছি।’’

জানা গিয়েছে, তেলিঘাটা এলাকার জামালগাছি মৌজার ৬ শতক জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বর্গাচাষ করতেন হরিশঙ্কর মাল্লা। পাঁচমাস আগে তিনি মালিকের কাছ থেকে জমিটি কিনে চাষবাসের পাশাপাশি নানাধরণের গাছগাছালি পুঁতেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, গত ১৫ অক্টোবর সকালে এলাকার তৃণমূল সমর্থক কিছু ছেলে জমির সীমানা বেড়া ভেঙে গাছ কেটে ওই জমিতে কালীপুজোর বেদী তৈরি ও ক্লাবঘরের খুঁটি পুঁতে ফেলে। বাধা দিলে অভিযুক্তরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ।

Advertisement

এরপর হরিশঙ্করবাবু তপন থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক, ভূমি রাজস্ব আধিকারিক এবং প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হলেও বিচার মেলেনি।

এ দিকে শারদ উৎসবে সবাই যখন ব্যস্ত ছিলেন, অভিযোগ সেই সময় সবার অলক্ষ্যে জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির মহাকাল পাড়ায় জেলা পরিষদের একটি জমি দখল করে তাতে চলছিল অবৈধ নির্মাণ ৷ এ দিন সকালে বিষয়টি সকলের নজরে আসার পরেই ভেঙে দেওয়া হয় ওই জমিতে তৈরি হওয়া চারটি পাকা পিলার ৷

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি ফুটবল মাঠের সংযোগকারী রাস্তা হিসাবেই ওই জমিটিকে ফাঁকা রেখেছিল জেলা পরিষদ ৷ কিন্তু কয়েকদিন ধরেই সেই জমিটির চারদিক ঘেরা অবস্থায় দেখছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ সন্দেহ হওয়ায় এ দিন তাঁরা দেখেন ওই ঘেরা জায়গার মধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছে চারটা পাকা পিলার ৷ তারপরই খবর দেওয়া হয় স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য গোবিন্দ রায়কে৷ গোবিন্দবাবু ছাড়াও শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মনোজ রায় সেখানে ছুটে যান ৷ তারপর এদিনই ওই পিলারগুলি ভেঙে দেওয়া হয় ৷

গোবিন্দবাবুর কথায়, ‘‘ময়নাগুড়ি টার্মিনাসের ইজারাদার হিসাবে পরিচিত অনিল দাস নামে এক ব্যাক্তি ওই জমিতে বেআইনি নির্মাণ করছিলেন ৷ তার কাছে কোনও বৈধ কাগজ-পত্রও ছিল না ৷ তাই ওই পিলারগুলি এ দিন ভেঙে দেওয়া হয় ৷ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মনোজবাবুও বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই জমিতে নির্মাণ কাজের জন্য অনিলবাবুর কাছে কোন অনুমতিই ছিল না ৷’’

তবে অনিলবাবুর দাবি, ‘‘কয়েক বছর আগে ওই জমিতে একটা খাবার হোটেল তৈরির জন্য জেলা পরিষদের কাছে আবেদন করি ৷ জেলা পরিষদ আবেদন ম়ঞ্জুর করে আমায় ২৮০ ফুট জমি দেয় ৷ দিন কয়েক আগে সেই কাজটা শুরু করি ৷ কিন্তু এ দিন সবাই বলছেন, ওটা নাকি মাঠে যাওয়ার রাস্তা৷ আমি আগে তা জানতাম না৷’’ গোবিন্দবাবু অবশ্য অনিলবাবুর বক্তব্য মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন