প্রবল চাপের মুখে অন্তত পঞ্চাশ শতাংশ টাকা ফেরতের আশ্বাস দিচ্ছেন পানিট্যাঙ্কির সরকারি জমি বিক্রিতে অভিযুক্তরা। গত শুক্রবার বিকেলে টাকা ফেরত চেয়ে এলাকার এক তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও হয়। তার পরে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে টাকা ফেরতও দিয়ে দিয়েছেন বলে কয়েকজন ভুক্তভোগীর দাবি। তাতেও টাকার লেনদেন অবশ্য থেমে নেই। অভিযোগ, তদন্ত ধামাচাপা দিতে হবে বলে দাবি করে এরই মধ্যে অন্তত দেড়শো জনের থেকে আরও টাকা আদায় করা হয়েছে। সব মিলিয়ে অবৈধ জমির বিক্রি নিয়ে টাকা খোলামকুচির মতো যেন উড়ছে নেপাল সীমান্তবর্তী পানিট্যাঙ্কিতে। তবে দখল করা জমি যে সরকারি লিজের, তা প্রমাণ হয়ে যাওয়ার পরে, যে কোনও দিন উচ্ছেদের অভিযান হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
সতীশচন্দ্র চা বাগানের জমির প্রায় ৫ একর দখল করে প্লট করে বিক্রি শুরু হয়েছিল পানিট্যাঙ্কিতে। অভিযোগ এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী তথা নেতা-জনপ্রতিনিধিরা কয়েকজন জমি বিক্রির পুরো পরিকল্পনা করেছেন। তিন মাস ধরে চা বাগানের জমি দখল করে খুঁটি পোঁতা হলেও পুলিশ-প্রশাসন কোনও তরফেই পদক্ষেপ হয়নি। চা বাগান কর্তৃপক্ষের তরফেও কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। সব পক্ষের সঙ্গে রফা করেই জমি বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়েছিলেন সেই নেতারা।
সেই মতো চা বাগানের জমিতে কংক্রিটের খুঁটি পোতা হয়। কোথাও সিমেন্টের ঢালাইও হয়ে যায়। প্লট করে অন্তত দু’শোজনের কাছে বিক্রি হয়। শ্রমিকদের আবাসন তৈরির জন্যও পৃথক জমি রাখা হয়। জমির টাকা নিলেও কোনও রসিদ বা চুক্তি হাতে দেওয়া হয়নি ক্রেতাদের। প্লটের নকশা তৈরি হয়েছিল। যাঁরা টাকা দিয়েছেন তাঁদের নাম সেই প্লটে লিখে রাখা হয়। দখল করা জমি সমীক্ষা করেছে প্রশাসন। জমি বিক্রেতাদের তৈরি প্লটের নকশাও প্রশাসনের হাতে পৌঁছেছে। তার ভিত্তিতেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রশাসনের কাছে খবর পৌঁছেছে, এর পরেই কয়েকজন ব্যবসায়ীকে টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে অভিযুক্ত বিক্রেতারা। যদিও, এলাকার সিপিএম এবং তৃণমূল নেতাদের কয়েকজন এ দিনও দাবি করেছেন, জমি বিক্রিতে কোনও লেনদেন হয়নি। উচ্ছেদ হওয়া ছোট ব্যবসায়ীরা নিজেরাই পুনর্বাসনের জন্য চা বাগানের জমির দখল নিয়েছেন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পুরো পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখা হয়েছে. সব অভিযোগের কড়া পদক্ষেপ হচ্ছে।’’
গত শনিবার দিনভর ভূমি দফতর থেকে দখল করা জমিতে সমীক্ষা করেছে. দেখা গিয়েছে জমিটি এখনও সরকারি লিজে রয়েছে।. সে রিপোর্ট প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে পৌঁছে গিয়েছে। দ্রুত জমির দখল সরানো হবে বলে জানা গিয়েছে।