রাজনগরের স্রষ্টাকে স্মরণ রাজ-নগরের

অমিয়ভূষণের সাহিত্যকর্ম থেকে জীবনের নানা দিকও এ দিন বক্তাদের কথায় উঠে এসেছে।  কোচবিহারের বাসিন্দা প্রবীণ শিক্ষাবিদ দিগ্বিজয় দে সরকার বলেন, “অমিয়ভূষণের লেখার ভাষা পাঠকের বোঝার অসুবিধে সৃষ্টি করেনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:২৫
Share:

শ্রদ্ধা: অমিয়ভূষণ মজুমদারের জন্মশতবর্ষ উদযাপন। নিজস্ব চিত্র

‘স্রষ্টা’কে জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধা জানাল ‘রাজনগর’।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ‘রাজার শহর’ কোচবিহারে সাহিত্যিক অমিয়ভূষণ মজুমদারের জন্মশতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান হয়। কোচবিহারে প্রয়াত সাহিত্যিকের ‘অমিয়ভূষণ সরণি’র বাড়িতে তাঁর পরিজনেরা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। ওই বাড়িতে বসেই বিখ্যাত নানা উপন্যাস লিখেছিলেন তিনি। ১৯৮৬ সালে ‘রাজনগর’ উপন্যাস লেখার জোড়া স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছিলেন সাহিত্য অকাদেমি ও বঙ্কিম পুরস্কার। এ দিনের অনুষ্ঠানে কোচবিহার ছাড়াও, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার সাহিত্যিক, অনুরাগীরা উপস্থিত ছিলেন।

অমিয়ভূষণের সাহিত্যকর্ম থেকে জীবনের নানা দিকও এ দিন বক্তাদের কথায় উঠে এসেছে। কোচবিহারের বাসিন্দা প্রবীণ শিক্ষাবিদ দিগ্বিজয় দে সরকার বলেন, “অমিয়ভূষণের লেখার ভাষা পাঠকের বোঝার অসুবিধে সৃষ্টি করেনা। উত্তরবঙ্গ, পঞ্চানন বর্মা, শিলচর-সহ হাতেগোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অমিয়ভূষণের লেখা পাঠ্যসূচিতে রয়েছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও একই ভাবে পাঠ্যসূচিতে তাঁর লেখা আনা দরকার হোক। তাহলেই উনি আরও প্রসার লাভ করবেন।”

Advertisement

প্রয়াত সাহিত্যিকের অনমনীয় ব্যক্তিত্বের কথাও তুলে ধরেছেন তিনি। সাহিত্যিক দেবজ্যোতি রায়ও জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে ছিলেন। তিনি বলেন, “আরও ব্যাপকভাবে অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়েও অমিয়ভূষণের উপন্যাস, সাহিত্যকর্ম পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত হোক সেটাও আমরা চাইছি।”

কবি মণিদীপা নন্দী বিশ্বাস বলেন, “আমার বাবার কাছে রবীন্দ্রনাথ যেমন ছিলেন, তেমনি অমিয়ভূষণের জন্যও জায়গা ছিল। খুব কাছ থেকে তাঁকে ছবি আকঁতে দেখার সুযোগও পেয়েছি। উনি শুধু কোচবিহারের নন।”

সাহিত্যিকের জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নস্টালজিক হয়ে পড়েন কোচবিহারের বাসিন্দা কবি সমীর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমার বয়স ৮০ হতে আর বছর দেড়েক বাকি। ছাত্রজীবন থেকেই দাদার সংস্পর্শে আসার সুযোগ হয়েছিল। সে সময় কোনও বই পড়িনি শুনলে অনেক বকাঝকাও খেয়েছি। তাঁর কাছেই জেনেছি পড়ার বিকল্প নেই।” কবি সুবীর সরকার বলেন, “অমিয়ভূষণ কলকাতায় যাননি, কলকাতা এসেছে তাঁর কাছে।” সেইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, অমিয়ভূষণের সাহিত্যে প্রান্তিক মানুষের কথা জীবন্ত হয়ে উঠে এসেছে। সাহিত্যিককে জানতে অমিয় কন্যা এণাক্ষী মজুমদারের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন তিনি। এনাক্ষী দেবী বলেন, ‘‘১০ বছর পরিশ্রম করে বাবার জীবনকথা লিখেছি।” পরিবারের লোকেরা জানান, সাহিত্যিকের নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। নানা তথ্য মিলবে। মতামত জানানর সু্যোগ থাকবে।

উদ্যোক্তারা জানান, এ দিন ওই অনুষ্ঠানে কোচবিহার পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ, প্রাক্তন আরএসপি বিধায়ক নির্মল দাস প্রমুখ ছাড়াও প্রয়াত সাহিত্যিকের দুই পুত্র আনন্দজ্যোতি ও অপূর্বজ্যোতি মজুমদার, কন্যা মীনাক্ষী, এথেনা, এণাক্ষীদেবীরা উপস্থিত ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন