স্বস্তি: অস্ত্রোপচারে সুস্থ শিশুটি। বুকের উপরে সেই লকেট। নিজস্ব চিত্র
ঘরের মেঝেয় পড়েছিল লাল টুকটুকে লকেট। খেলতে খেলতে সেই চকচকে লকেটই গিলে ফেলল ১৪ মাসের শিশু। সফল অস্ত্রোপচারে শিশুর শ্বাসনালীতে আটকে যাওয়া সেই লকেট বের করলেন মালদহ মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচক নবিনগর গ্রামে। শিশুটি সুস্থ হয়ে ওঠায় খুশি পরিবারের লোকেরা।
চলতি সপ্তাহেই এক কিশোরীর জটিল অস্ত্রোপচারে সাফল্য পান মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা। এ দিন ফের চিকিৎসকদের এই সাফল্যে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষচন্দ্র দাস। তিনি বলেন, ‘‘হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জন্য সাফল্য মিলেছে। সাধারণ মানুষকে নিখরচায় সুষ্ঠু পরিষেবা দিতে পেরে ভাল লাগছে।’’
কালিয়াচক থানার আলিনগর ১ পঞ্চায়েতের নবিনগর গ্রামের বাসিন্দা আকতারি বিবি। তাঁর স্বামী শুকরু শেখ শ্রমিকের কাজে মুম্বই গিয়েছেন। তাঁদের পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে আতিফা খাতুনই ছোট। এ দিন সন্ধে সাতটা নাগাদ আকতারি বিবি বাড়ির কাজকর্ম করছিলেন। অন্য ভাইবোনদের সঙ্গে ঘরের মেঝেয় খেলা করছিল ১৪ মাসের আতিফা। সেই সময়ে মেঝে থেকে একটি লকেট তুলে গিলে ফেলে সে। তার পরই যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকলে পরিবারের লোকেরা তাঁকে নিয়ে যান সিলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে স্থানান্তরিত করেন মালদহ মেডিক্যালে। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির শ্বাসনালীতে লকেট আটকে যাওয়ায় নিশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল। হাসপাতালে নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মহম্মদ আব্দুর রশিদের নেতৃত্বে গঠিত হয় তিন সদস্যের মেডিক্যাল টিম। সেই চিকিৎসকেরা ল্যারিঙ্গোস্কপির সাহায্যে শিশুর শ্বাসনালীতে আটক লকেটটি বের করেন।
রঙিন পাথর ও ধাতুর তৈরি লকেটটি দেড় সেন্টিমিটার চওড়া এবং দুই সেন্টিমিটার লম্বা। লকেটের একটি অংশ ধারালো ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক মহম্মদ আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘‘শ্বাসনালীতে লকেটটি ঘন্টা চারেক থাকলেই বিপদ হতে পারত। তবে পরিবারের লোকেরা সময় মতো শিশুটিকে নিয়ে আসায় চিকিৎসা করার সুযোগ পেয়েছি আমরা। দিন চারেক চিকিৎসা করার পর শিশুটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে।’’ আকতারি বিবি জানান, তিনি ঘটনায় খুবই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘চিকিৎসকেরা দ্রুত মেয়ের গলায় আটকে থাকা লকেটটি বের করার পর স্বস্তি পেলাম।’’