চুক্তি বাতিল পুরসভারও

কোটি ঘুষে কি পতন লগিনের

জমানা বদলের সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে হাত করে লগিন বালুরঘাটে দোর্দণ্ডপ্রতাপ হয়ে উঠেছিলেন বলে এখন দলেরই একাংশে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

লগিন দাস

জেলার কিছু নেতাকে হাত করে দোর্দণ্ডপ্রতাপ হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু দলের এক রাজ্য স্তরের নেতাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে তৃণমূল নেতা লগিনের সাম্রাজ্য বিস্তারে ‘রথের চাকা’ শেষ যাত্রায় ‘বসে গেল’ বলে দল সূত্রের খবর। তৃণমূল সূত্রই জানাচ্ছে, খুন, খুনের চেষ্টা, বোমা বিস্ফোরণ, জমি মাফিয়ার মতো একাধিক ফৌজদারি মামলা থাকা সত্ত্বেও গত এক দশক ধরে পার পেয়ে এসেছেন লগিন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমল থেকে বালুরঘাটে সিপিএমের কিছু জেলা স্তরের নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় লগিনের। আরএসপির বিরুদ্ধে লড়ে ভাটপাড়া পঞ্চায়েতের প্রধান হন। তারপরেই ক্ষমতা বিস্তারের শুরু তৎকালীন কংগ্রেস নেতা লগিনের। জমানা বদলের সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীকে হাত করে লগিন বালুরঘাটে দোর্দণ্ডপ্রতাপ হয়ে উঠেছিলেন বলে এখন দলেরই একাংশে অভিযোগ উঠেছে।

কেমন তাঁর প্রতাপ ছিল?

Advertisement

তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, তোলাবাজি এবং বালুরঘাটে একের পর এক জমি দখলের অভিযোগ ওঠে লগিনের বিরুদ্ধে। বিলাতি মদ বিক্রির কারবারও শুরু করেছিলেন লগিন। স্থানীয় ডাঙি এলাকায় বেসরকারি বিএড কলেজের অংশীদার হন তিনি। পুরসভার সঙ্গে পিপিপি মডেলে ব্যবসা থেকে হিলি সীমান্তে বহির্বাণিজ্যেও পা বাড়িয়েছিলেন বলে দল সূত্রের খবর। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, পুরনো মামলা থেকে রেহাই পেতে লগিন দলের এক নেতার কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, পুলিশকে এক কোটি টাকাও দিতে পারেন। সে সময় সভা থেকে লগিনকে বের করে দেন দলের ওই নেতা। এরপর জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর আর দেরি হয়নি লগিনকে জালে তুলতে।

দল সূত্রের খবর, বালুরঘাট পুরসভায় আধিপত্য বিস্তার করে পুরসম্পত্তি দখল ও একাধিক দুর্নীতি নিয়ে পাঁচ মাস আগেই লগিনের বিরুদ্ধে দলের জেলা কমিটিতে অভিযোগ উঠেছিল। তখন কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? দলের ভিতরে সেই প্রশ্ন উঠেছে। তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘গঙ্গারামপুরে থেকে বালুরঘাটে লগিনের বিষয়ে সব খবর রাখা সম্ভব হয়নি। তবে এখন সব স্পষ্ট হতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ পুরসভার সঙ্গে লগিনের সমস্ত চুক্তি বাতিল করতে ইতিমধ্যে পুরকর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বালুরঘাটের তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভায় মোটা টাকায় লগিনের গাড়ি ভাড়া এবং পুরসভার স্যানিটারি ভবন ভাড়া নিয়ে লগিনের বাইকের শোরুমের চুক্তি বাতিল করতে বলা হয়েছে।’’ ২১ জুলাই শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানের পর ওই প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে পুরকর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন। বিজেপির সঙ্গে লগিনের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পৌঁছয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন