খোশমেজাজে: করিমের সঙ্গে দীপা। নিজস্ব চিত্র
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের একসময়ের মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করলেন দীপা দাশমুন্সি। বৃহস্পতিবার ইসলামপুরে মন্ত্রীর বাড়িতে কেন দীপা গিয়েছেন, তা নিয়ে জল্পনায় উত্তাল রায়গঞ্জ। চমকটা অবশ্য বুধবারেই দিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। প্রশ্ন উঠেছে, তৃণমূল ছেড়ে আসা প্রাক্তন মন্ত্রীর নতুন দল কি তাহলে কংগ্রেসকে সমর্থন করবে। দীপা-মান্নান কি এটাই অনুরোধ করে গিয়েছেন করিমকে?
অবশ্য তিনি নিজে কী করবেন, তা অবশ্য খোলসা করেননি প্রাক্তন মন্ত্রী। সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানিয়েছেন, কোনও দলকেই তিনি সমর্থন করবেন না। তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে কোনও দলকেই সমর্থন করছি না। আমার কর্মী-সমর্থকদের বলেছি, নিজের পছন্দমতো প্রার্থীকেই ভোট দেওয়ার জন্য।’’ কিন্তু এর পরেও জল্পনা থামানো যায়নি রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের আলোচনায়।
তৃণমূল থেকে বেরিয়ে নিজের বিকাশবাদী পার্টি গঠন করলেও এবার লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হননি প্রাক্তন মন্ত্রী করিম। তবে এনডিএ’র সমর্থনে প্রার্থীপদ পেলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতেন বলেই জানিয়েছেন তাঁর অনুগামীরা। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন তিনি। এরই মধ্যে এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ইসলামপুরের মেলার মাঠের বাড়িতে গিয়েছিলেন দীপা। তাঁকে সরাসরি নিজের বাড়ির ভিতরে নিয়ে যান করিমের পরিবারের সদস্যেরা। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ দু’জনের মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে। করিম পরে বলেন, ‘‘দীপা জানিয়েছেন, এই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলেন। আমার বাড়ি কাছে, সেটা জেনে তিনি দেখা করে গেলেন। তেমন কিছু আলোচনা তিনি করেননি।’’
করিম আরও বলেন, ‘‘বুধবার আব্দুল মান্নানও এসেছিলেন। তিনি তাঁদের দলে যাওয়ার বিষয়ে জানিয়েছিলেন।’’ যদিও এ দিন দীপা অবশ্য বলেন, ‘‘করিম চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল এটা। প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছি। ভোট প্রচার করতে এলাকায় ঘুরছি। সমর্থনের জন্যই গিয়েছিলাম মাত্র।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রায়গঞ্জে দীপার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন করিমেরই ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তৃণমূলের কানাইয়ালাল আগারওয়াল। গত লোকসভা নির্বাচনে করিমকে হারিয়েই জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেসের কানাইয়ালাল। তবে কানাইয়ালাল তৃণমূলে যোগ দেওয়া থেকেই প্রাক্তন মন্ত্রী নিজের জায়গা হারাতে শুরু করেন দলে। এমনকি, তাঁর জন্যই একাধিক পদ খুইয়ে দল ছাড়েন করিম। সেই তিক্ততা অভিজ্ঞতাকেই কংগ্রেস হাতিয়ার করতে চাইছে বলে মনে করছেন অনেকেই। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘উনি তো একসময় কংগ্রেস করতেন। জেলার একজন বড় নেতা বসে রয়েছেন। এ দিন প্রার্থী ওঁর খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন।’’
এ দিন দিনভরই ইসলামপুরের গুঞ্জুরিয়া, রামগঞ্জ, শিয়ালতোড়ের বাইপাসে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সাধারণ মানুষদের নিয়ে কর্মী বৈঠক করেন দীপা। প্রচারে গিয়ে জেলার মানুষের জন্য যে প্রিয়রঞ্জন কাজ করেছেন তাও তুলে ধরেছেন তিনি।