এক কাপ চা ১০ টাকা। একটি রজনীগন্ধা স্টিকের দাম ৮০ টাকা। এখনও খোলা বাজারে যে দর কল্পনাও করতে পারেন না অনেকে, ভোটের বাজারে সেই দামই গুনতে হবে প্রার্থীদের। জলপাইগুড়ি জেলার নির্বাচনী অফিস এমনই দর বেঁধে দিয়েছে। এক লিটার জলের বোতলের দাম দশ থেকে বারো টাকা। কোনও দোকানে ১৫ টাকাও নেওয়া হয়। কিন্তু প্রার্থী যদি প্রচারে বেরিয়ে এক বোতল জল কিনে খান বা তাঁর সঙ্গীসাথীরা কেউ তখন জল কিনে খায়, তবে সেই বোতলের দাম ২০ টাকা করে ধরবে নির্বাচন কমিশন। ধূপগুড়ি বা মালবাজারে চিঁড়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। দামও কম। কেজি প্রতি ত্রিশ থেকে চল্লিশ টাকা। চড়া রোদে ভোটের মিছিল সেরে আসা কর্মী-সমর্থকদের চিঁড়ে ভেজানো খাওয়ানোর রীতি রয়েছে জেলায়। এ বারের লোকসভা ভোটে কর্মী-সমর্থকদের চিঁড়ে খাওয়াতে গেলে কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে কেনা হচ্ছে বলে খরচের হিসেবে ধরা হবে।
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার দিনই দিল্লিতে কমিশন দাবি করেছিল, এ বারের ভোটে খরচে কড়া নজর রাখা হবে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী এ বারের লোকসভা ভোটে প্রার্থী পিছু ৭০ লক্ষ টাকা করে খরচ করতে পারবে। এই খরচে ফ্লেক্স ব্যানারের সঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের খাওয়াদাওয়া, নেতাকে মালা পরানো, সব খরচই ধরা রয়েছে। এক এক রাজ্যে এক এক জিনিসের হরেকরকম দর। সে কারণে জেলার নির্বাচন অফিসই সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের খরচ বেঁধে দিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার বেঁধে দেওয়া দর দেখে মাথায় হাত পড়েছে বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীদের।
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটের খরচ সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “বাজারের দাম খোঁজ নিয়ে তার থেকে দশ শতাংশ বাড়িয়ে হিসেব করা হয়েছে। সেটাই প্রথা। সব রাজনৈতিক দলকেই হিসেব দেখানো হয়েছে, সকলের থেকে সম্মতিও নেওয়া হয়েছে।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোট প্রচারে মিছিল বা সভায় প্রার্থীকে যদি কেউ ফুলের মালা পরান অথবা ফুল উপহার দেন, তার খরচও যোগ করা হবে। ফুলেরও চড়া দাম। রজনীগন্ধার একটি ডাঁট বা স্টিক আশি টাকা। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলি অনেক এমন খরচ করে, যেগুলির হিসেব পাওয়া যায় না। রাজনৈতিক দলের সভা-সমিতির ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে প্রশাসন। সেগুলির ফুটেজ মিলিয়ে খরচের হিসেব করা হয়। কিন্তু প্রচুর ছোট সভা-সমাবেশ-মিছিলের ভিডিয়ো তোলা সম্ভব হয় না। সেগুলি বাদ পড়ে। প্রশাসনের একটা সূত্রে দাবি, চোখ এড়িয়ে যাওয়া খুঁটিনাটি এই খরচগুলিতেও রাশ টানতে সব জিনিসের দর বাঁধা হয়েছে বাজারচলতির দামের অনেক বেশি।