বাদানুবাদ: আব্দুলঘাটায় বুধবার। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে বাসিন্দাদের বিক্ষোভ, ভোটকর্মীদের আটকানো এবং পুলিশের সঙ্গে বচসা, ধস্তাধস্তির জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল এলাকা। বুধবার বিকেলে এ সবই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের আব্দুলঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছত্রপুর প্রাথমিক স্কুল, ছটপড়ুয়া এলাকার একটি বুথ ও ইসলামপুর ব্লকের গাইসাল ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গাইসাল প্রাথমিক স্কুল সরগরম হয়ে ওঠে। রাত বাড়তেই খবর মেলে বাহিনে হাটমণি শঙ্করপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও বিক্ষোভ হয়। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা চোপড়ার সুকদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়েও বাসিন্দারা একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
এলাকার কিছু বাসিন্দাদের দাবি, ভোটের দিন রাজ্য পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বুথ থাকলে কী পরিস্থিতি হয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং তার আগে রায়গঞ্জের পুরভোটে বোঝা গিয়েছে। তাঁদের দাবি, গুলি, বোমাবাজি, ভোটলুট চোখের সামনে দেখেছেন অনেকেই। দাবি, ভোট দিতে পারেননি অনেকেই। তাই এ বার লোকসভা নির্বাচনে যে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী যায়নি, তার কয়েকটিতে বাসিন্দাদের কয়েক জন বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশকেও তাঁরা বাধা দেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী না এলে ভোটকর্মীদের ঢুকতে দেবেন না বলে পথ আটকান। অভিযোগ, বাসিন্দাদের বিক্ষোভ চলাকালীন আব্দুলঘাটা প্রাথমিক স্কুলের সামনে বিজেপির নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা ও হাতাহাতি বেঁধে যায়। ছত্রপুরে পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা না হলে আজ, বৃহস্পতিবার বুথগুলোতে ভোট করতে না দেওয়ার দাবিতে অনড় রয়েছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনার দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে তৈরি কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের নজরদারিতে ওই বুথগুলোতে ভোট নেওয়া হবে। বাসিন্দাদের আতঙ্কের কোনও কারণ নেই।’’
আব্দুলঘাটা এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মাম্পি বর্মণ, পেশায় চাষি ভজহরি সরকারের দাবি, গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে আমাদের বুথে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা এসে গন্ডগোল করে ছাপ্পাভোট দিয়েছিল। মাম্পি বলেন, ‘‘তাই লোকসভা নির্বাচনে এই বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা না হলে আমরা ভোট হতে দেব না।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘জেলার বিভিন্ন বুথে বাসিন্দাদের উস্কে বিজেপি সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে ভোট লুঠের ছক করেছে।’’ বিজেপির দাবি, বাসিন্দারা যথার্থ কারণেই আন্দোলন করছেন।