আলোচনা: শিলিগুড়ির বাঘা যতীন পার্কে জনসভার ফাঁকে তৃণমূলের দার্জিলিঙের পর্যবেক্ষক, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
এক দিকে মেয়রকে বিঁধলেন। অন্য দিকে শিলিগুড়ির উন্নয়নের জন্য কী কী কাজ করেছেন, দিলেন তার তালিকা। এবং সে জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্মরণ নিলেন এমনকি রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। শনিবার বাঘা যতীন পার্কের সভা থেকে এ ভাবেই শিলিগুড়ির ভোট চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘আমার বিশ্বাস আপনারা আমাদের ভোট দেবেন। আপনাদের আশীর্বাদ, শুভেচ্ছা, দোয়া থেকে যেন বঞ্চিত না হই।’’
৫০ মিনিটের বক্তব্যের অনেকটা সময় মুখ্যমন্ত্রী ব্যয় করেন শিলিগুড়িকে নিয়ে। বলেন, ‘‘কী দিইনি শিলিগুড়িকে? আগে তো লোকে তাকিয়েও দেখত না। বেঙ্গল সাফারি, ভোরের আলো, উত্তরকন্যা আমাদের আমলেই হয়েছে। ফ্লাইওভার হয়ে গেলে ৪৫ মিনিটে গজলডোবা পৌঁছে যাবেন। নতুন রাস্তা হয়েছে। কোনটা হয়নি? সবই তো করে দেওয়া হয়েছে। এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে!’’ ২৬ একর জমি দিয়ে রাজ্য সরকারই বাগডোগরা বিমানবন্দরের নাইট ল্যান্ডিংয়ের ব্যবস্থা করেছে বলে জানান মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের গড়িমসির জন্য দার্জিলিং মোড়ে ফ্লাইওভারের কাজ হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কী কী করেছেন, তারও বর্ণনা দেন। বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে রেলওয়ে নিয়োগ বোর্ড আমিই করে দিয়েছিলাম। নতুন নতুন ট্রেন, কাঞ্চনকন্যা, পদাতিক, শতাব্দীর মতো ট্রেন— সব তো আমার করে দেওয়া। চ্যাংরাবান্ধা থেকে মালবাজার বা ময়নাগুড়ি-যোগীঘোপা, সব করে দিয়েছিলাম। এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে না।’’
পাহাড়ের দুটি সভাতেই উপচে পড়েছিল ভিড়। তবে শনিবার মাঠ ভরাতে পারেনি তৃণমূল। যা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে শাসকদলের নেতাদের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে ঢোকার আগে পর্যন্ত মাঠ কার্যত ফাঁকাই ছিল। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে মাইক হাতে গান শুরু করেন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। পরপর চারটে গান করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতার সময়েও মাঠের অর্ধেক ফাঁকাই ছিল। জেলা তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য দাবি করেন, রোদের জন্য অনেকেই মাঠে ঢোকেননি। গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ফাঁকা মাঠ চোখ এড়ায়নি মুখ্যমন্ত্রীরও। তিনি বলেন, ‘‘মিটিংটা সন্ধ্যার দিকে হলে ভাল হত। আমি জানি শিলিগুড়ির লোকেরা কাজে ব্যস্ত থাকেন। অনেকে স্কুলে যায়, কলেজে যায়, কেউ অফিসে যায়। দুপুরে মেয়েদেরও অনেক কাজ থাকে। মেয়েরাও অনেক কাজ করেন।’’ লোক কম হওয়ায় শাসকদলকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নাম না করে অশোক ভট্টাচার্যকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘‘এখানকার বিধায়ক, মেয়র কোনও কাজ করেন না। চিঠি লেখা ছাড়া।’’ তার উত্তরে মেয়র বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির মানুষের জন্যই চিঠি লিখি, ব্যক্তিগত কারণে নয়। চিঠিতে কোনও অশ্লীল কথা লিখি না। তাই সেটা কোনও অপরাধ নয়।’’ অশোকবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘কেন উনি শিলিগুড়ি পুরসভাকে প্রাপ্য টাকা দিচ্ছেন না, তার জবাব দিন।’’