ভিক্ষায় পেট চলে নির্যাতিতার দিদিমার

শূন্য ঘরে একাই ঘোরেন, একাই নিজের মনে কথা বলে চলেন। খিদে পেলে পাড়ায় প্রতিবেশীর বাড়িতে চেয়েচিন্তে খান।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

দেহাবন্দ শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০৫:৪৮
Share:

শ্রীহীন: শূন্য বাড়ি, বাসিন্দা বলতে বৃদ্ধা দিদিমা। দেহাবন্দে নির্যাতিতার বাড়ির ছবি। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে পুরো একটা বছর। এখন দু’বেলা ভিক্ষে করেন দামচি মার্ডি। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডির দেহাবন্দের নির্যাতিত আদিবাসী তরুণীর দিদিমা, একমাত্র জীবিত অভিভাবক। ষাটোর্ধ্ব এই বৃদ্ধার স্বামী লক্ষ্মণ সোরেন মারা গিয়েছেন মাসতিনেক আগে। নির্যাতিত নাতনির ঠিকানা এখন একটি সরকারি হোম। ফলে শূন্য ঘরে একাই ঘোরেন, একাই নিজের মনে কথা বলে চলেন। খিদে পেলে পাড়ায় প্রতিবেশীর বাড়িতে চেয়েচিন্তে খান।

Advertisement

এক বছর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন দেহাবন্দের গোয়ালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই বৃদ্ধার তরুণী নাতনি। অভিযোগ, ধর্ষণের পরে যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালায় দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্যাতিতার সমস্ত চিকিৎসার ভার নিয়েছিলেন। অথচ ওই তরুণীর বাড়িটাই চেনেন না শাসক দলের স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রিঙ্কি দেবশর্মা। জানালেন, এক বছর আগের সেই ধর্ষণের ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে বললেন, ‘‘আমি ওঁদের বাড়িটা চিনি না। এবার প্রচারে গেলে খোঁজ নেব।’’ তবে এসবে এখন আর কিছু এসে যায় না ওই তরুণীর দিদিমার। নানা অসুখে জীর্ণ শরীরটা আর টানতে পারেন না। কানেও শুনতে পান না একেবারেই। কিছু জিজ্ঞেস করলে অন্য কিছু বুঝে অন্য কথা বলতে শুরু করেন। ফলে তাঁর কাছে ভোট নিয়ে কিছু বলা গেল না। তবে গ্রামের বাসিন্দা বাবুরাম টুডু, সীতা মুর্মু, মিনতি হেমব্রমরা ক্ষোভের সুরে জানালেন, ওই ঘটনার পরে প্রশাসন থেকে অনেক লোক এসেছিল। নেতারাও অনেক কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরে আর তাঁদের দেখা মেলেনি। তাঁদের অভিযোগ, ভোটের সময়ে গাড়ি পাঠিয়ে নিয়ে যায় ভোট দেওয়ার জন্য। ভোট শেষ হলেই সবাই ভুলে যায়। বাবুরাম বললেন, ‘‘আমরা এবার জবাব চাইব। জবাব না পেলে নেতাদের ঢুকতে দেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন