শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র
উত্তরপ্রদেশের ভদোহীর রোহতা বাজারে কার্পেট তৈরি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত এনায়েতপুরের ৯ শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকার কথা বললেন তৃণমূলের মালদহ জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার এনায়েতপুর ফুটবল মাঠে তৃণমূলের নির্বাচনী সভায় হাজির করা হয় মৃত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের সভামঞ্চের ডান দিকে পৃথক আসনে বসানো হয়। সভা শেষে মঞ্চ থেকে নেমে তাঁদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার কথা বলেন শুভেন্দু।
এ দিকে, তৃণমূলের দলীয় সভায় ডেকে মৃত ৯ শ্রমিকের পরিবারের পাশে থাকার ঘটনায় রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের দাবি, ওই শ্রমিকদের মৃতদেহ নিয়ে যে ভাবে তৃণমূল রাজনীতি করেছিল এলাকায়, এ দিন সেই একই চেষ্টা হল।
এ দিকে মন্ত্রী এ দিন শুধু পাশে থাকার কথা বলায় হতাশ মৃত শ্রমিকদের পরিবারগুলি। মৃত শ্রমিক জাহাঙ্গীর মুমিনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, ‘‘তৃণমূলের তরফে আমাদের এ দিন সভায় ডেকে আনা হয়। মন্ত্রীর কছে কিছু সাহায্যের আশা করেছিলাম আমরা। কিন্তু কোনও আশ্বাসই পাওয়া গেল না।’’ তবে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে মৃতদেহগুলি যখন নিয়ে আসা হয়েছিল এনায়েতপুরে, সে সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমি আসতে পারিনি। তাই এ দিন ওই পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করলাম। নির্বাচন আচরণবিধি লাগু রয়েছে। তাই কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়"।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের ভদোহীর রোহতা বাজারে কার্পেট কারখানায় বিস্ফোরণে মারা যান মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯ শ্রমিক। তখন রাজ্য সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সংখ্যালঘু বিধবা মহিলাদের পুনর্বাসন প্রকল্পের এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকার একটি করে ঘর দেওয়ার কথা ঘোষণা হয়। জেলা পরিষদের তরফে নগদ কুড়ি হাজার টাকা এবং সমব্যথী প্রকল্প দু’হাজার টাকা করেও দেওয়া হয়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ওই নয় শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ যে মাঠে শায়িত ছিল, সেখানে এ দিন দক্ষিণ মালদহ আসনের দলীয় প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেনের সমর্থনে নির্বাচনী সভা করে তৃণমূল। সভার মূল বক্তা ছিলেন শুভেন্দু। এ দিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘রুটি-রুজির জন্য উত্তরপ্রদেশে কার্পেটের কাজে গিয়ে এনায়েতপুরের ৯ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর পরে মুখ্যমন্ত্রী, প্রশাসন যে ভাবে তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তা অনন্য নজির। মন্ত্রী হিসাবে নয়, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে ওই পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’’ এ প্রসঙ্গে মানিকচকের কংগ্রেস বিধায়ক থাকেন আলম বলেন, ‘‘বিস্ফোরণের পরে মৃতদেহগুলি নিয়ে রাজনীতি করেছিল তৃণমূল। এ দিন রাজনৈতিক সভায় ওই পরিবারগুলিকে এনে ফের রাজনীতি করল তারা। এলাকার মানুষ তা ভালো চোখে নেননি।’’