দ্বন্দ্ব মেটাতেই ফের অর্পিতা?

সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনায় প্রহর গুণছিলেন বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

Advertisement

নীহার বিশ্বাস

বুনিয়াদপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৯
Share:

সকাল থেকেই টানটান উত্তেজনায় প্রহর গুণছিলেন বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তৃণমূলের অন্দরের খবর, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দলের একটি পক্ষ যেমন মনে করছিল বিপ্লব মিত্রের নাম ঘোষণা কেবল সময়ের অপেক্ষা, তেমনই আর একটি পক্ষ বিশ্বাস রেখেছিল, এ বারেও অর্পিতা ঘোষই টিকিট পাবেন।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিপ্লববাবুর অনুগামীদের প্রস্তুতি ছিল তুঙ্গে, কোন লাইন লিখে দেওয়াল লিখন হবে সেটাও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় সকাল থেকে ‘বিপ্লব মিত্র জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিয়ে তাঁকেই প্রার্থী করা হোক বলে দাবিও তুলেছিলেন অনুগামীরা।

কিন্তু বিকেলে অর্পিতার নাম ঘোষণা হয়। তার পরেই অর্পিতার বালুরঘাটের বাড়িতে অনুগামীদের ভিড় উপচে পড়ে। গত কয়েক দিনের উৎকন্ঠা কাটিয়ে টেলিভিশনে নিজের নাম ঘোষণার খবর শুনেই অর্পিতাও কাল বিলম্ব না করে এ দিনই বালুরঘাটের বিভিন্ন জায়গায় দেওয়াল লিখনও শুরু করে দেন।

Advertisement

অর্পিতা বলেন, ‘‘দলনেত্রী আমার উপরে আস্থা রেখেছেন। আমি গত পাঁচ বছরে যত কাজ করেছি, তা আজ পর্যন্ত এই জেলার কোনও সাংসদ করতে পারেননি। আমি আবারও জিতব। জিতে জেলার জন্য আরও অনেক কাজ করব।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে পারবেন? অর্পিতার কথায়, ‘‘কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। জেলা সভাপতি বিপ্লবদার সঙ্গে বসে দলের প্রচার কৌশল ঠিক করব।’’

বিপ্লববাবুও বলেন, ‘‘আমাদের দলে প্রার্থী দিদিই ঠিক করেন। তাঁর নির্দেশ মতোই কাজ করব।’’

তৃণমূল সূত্রে খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ন্ত্রণ করতেই অর্পিতাকে ফের প্রার্থী করা হয়েছে। গত বিধানসভা ভোটের আগে দলের বিধায়কেরা বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তারপরে বিপ্লববাবুকে সরিয়ে দলের জেলা সভাপতি করা হয় শঙ্কর চক্রবর্তীকে। ভোটে অবশ্য তৃণমূলের ভরাডুবি হয়। মাত্র দু’টি আসনে তারা জেতে। বিপ্লববাবুকে ফের দলের সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। জেলায় তাঁর নেতৃত্বেই পঞ্চায়েতে লড়ে তৃণমূল। তবে তৃণমূলের অন্দরের খবর, বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে দলের বেশ কিছু নেতাকর্মীর ক্ষোভ এখনও প্রশমিত হয়নি।

সেই ক্ষোভ যাতে ফের মাথাচাড়া না দেয়, তাই অর্পিতাকেই বেছে নেওয়া হল বলে অনেকে দাবি করেছেন। দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি, জেলার এক প্রতিমন্ত্রী, গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন বিধায়করা বিপ্লবের বদলে অর্পিতাকে প্রার্থী করার পক্ষে সওয়াল করেছেন বলে খবর। সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত সব দিক খতিয়ে দেখে অর্পিতাকেই ফের দায়িত্ব দেওয়া হল বলে দাবি।

অর্পিতা প্রার্থী হওয়ার পরেও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে পোস্ট করা হয়েছে। সকালে করা কিছু পোস্ট মুছে দেওয়া হলেও নতুন করে ফের এই প্রচারে দলের দ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে বলেই দাবি বিরোধীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন