আনন্দময়ী ধর্মশালার নতুন সাজ। —নিজস্ব চিত্র।
রাসমেলার আগে কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির ও সংলগ্ন এলাকাকে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে দেবোত্তর ট্রাস্টবোর্ড কর্তৃপক্ষ। এরজন্য এক কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, মদনমোহন মন্দির সংলগ্ন শহরের সাগরদিঘি লাগোয়া এলাকা থেকে জেল মোড় পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তায় আলোকসজ্জার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আনন্দময়ী ধর্মশালার পরিকাঠামো উন্নয়ন করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর চালু, বৈরাগি দিঘির পাড় বাঁধানো এবং মন্দির চত্বর সাজানোর মত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বোর্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইটও চালু করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের বরাদ্দ ৭৪ লক্ষ টাকা খরচ করে আলোকসজ্জার জন্য টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। খুব দ্রুত কাজের বরাত দেওয়া হবে। রাসমেলার আগে ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলিই আলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে। বিল মেটাবে বোর্ড।”
সাগরদিঘি লাগোয়া এলাকা থেকে জেল মোড়গামী ওই রাস্তার পাশে কোচবিহারের অন্যতম আকর্ষণ মদনমোহন মন্দির। ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে পামতলা মোড় থেকে আনন্দময়ী ধর্মশালার সীমানা পর্যন্ত রাস্তায় আলোকসজ্জা করার কথা ভাবা হয়। পরে এলাকা আরও বাড়ানো হয়। আনন্দময়ী ধর্মশালার পরিকাঠামো উন্নয়নে পর্যটন দফতর ২৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। ওই টাকায় ধর্মশালার ছ’টি নতুন ঘর তৈরির কাজ শেষের পথে। তারমধ্যে দুটি ঘর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হচ্ছে। মদনমোহন মন্দির চত্বরে যাতায়াতের রাস্তা নতুন করে তৈরি এবং সাজানোর কিছু কাজ শেষ হয়েছে। এরজন্য খরচ হয়েছে প্রায় তিন লক্ষ টাকা। মন্দির লাগোয়া বৈরাগি দিঘির পাড় পাকা করতে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। দিঘির জল কমলে ওই কাজ শুরু করা হবে। ওয়েবসাইটের জন্য খরচ হবে এক লক্ষ টাকা। বোর্ডের সদস্য তথা সদর মহকুমা শাসক বিকাশ সাহা মঙ্গলবার জানান, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ধর্মশালার নতুন ঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ওই ঘর খুলে দেওয়া হলে মন্দির লাগোয়া এলাকায় পরিবার নিয়ে আগ্রহীরা থাকার সুযোগ পাবেন।
ট্রাষ্ট সূত্রেই জানা গিয়েছে, ১৮৯০ সালে বৈরাগি দিঘির কাছে মদনমোহন মন্দির তৈরি হয়। সারা বছর মন্দিরে ভিড় থাকে দর্শনার্থীদের। কয়েকমাস আগে মন্দিরে অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থা চালু হয়েছে। বোর্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইট না থাকায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে পুজো হচ্ছে। বোর্ডের নিজস্ব ওয়েবসাইট চালুর মাধ্যমে দেবোত্তরের আওতাধীন বিভিন্ন মন্দিরের ছবি, বিগ্রহ, পুজো সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য সহজেই যাতে আগ্রহীরা মাউস ক্লিক করে পেয়ে যান, সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।