ঝড়ে কোটি টাকা ছাড়াল আমের ক্ষতি

ঝড়ের দাপটে ঝরে পড়েই এবার বিপুল পরিমাণ আমের ক্ষতি হল মালদহে। উদ্যান পালন দফতরের দাবি জেলার শুধুমাত্র দশটি ব্লকেই এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এবারের উৎপাদনের নিরিখে এই ক্ষতির পরিমাণ বিপুল না হলেও বহু এলাকায় আমচাষিদের একাংশকে পথে বসিয়ে দিয়েছে ঝড়।

Advertisement

বাপি মজুমদার

মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৪
Share:

ঝড়ে ঝরে পড়া আমের স্তূপ। ছবি: বাপি মজুমদার।

ঝড়ের দাপটে ঝরে পড়েই এবার বিপুল পরিমাণ আমের ক্ষতি হল মালদহে। উদ্যান পালন দফতরের দাবি জেলার শুধুমাত্র দশটি ব্লকেই এই ক্ষতির পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এবারের উৎপাদনের নিরিখে এই ক্ষতির পরিমাণ বিপুল না হলেও বহু এলাকায় আমচাষিদের একাংশকে পথে বসিয়ে দিয়েছে ঝড়। জেলা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের উপ অধিকর্তা প্রিয়রঞ্জন সন্নিগ্রাহী বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঝড়ে জেলার ১০টি ব্লকে শুধু আমেরই পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক রিপোর্ট মিলেছে। তবে আর কোনও বিপর্যয় না হলে এবছর এরপরেও আমের ফলন ভালোই হওয়ার কথা। কেননা মাঝেমধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছে। যা আমের পক্ষে উপকারী।’’ শুধু আম নয়,ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে লিচু ও কলাচাষেরও।

Advertisement

উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২১ এপ্রিল সন্ধ্যায় জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ঝড়-বৃষ্টি হয়। তাতে ১০টি ব্লকে আম ঝরে পড়ে নষ্ট হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-১, চাঁচল-১, কালিয়াচক-১, কালিয়াচক-২, কালিয়াচক-৩, গাজল, বামনগোলা, হবিবপুর, পুরাতন মালদহ ব্লক। এছাড়া ইংরেজবাজার ব্লকের একাংশেও আম চাষের ক্ষতি হয়েছে। ওই ১০ ব্লকে ঝরে পড়া আমের পরিমাণ ৫ হাজার মেট্রিক টন। যার আর্থিক মূল্য ৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। তবে আম উত্পাদনের অন্যতম প্রধান এলাকা মানিকচক ও রতুয়ায় ঝড়ের প্রভাব না পড়ায় ক্ষতি অনেকটাই এড়ানো গিয়েছে।

জেলায় আমের পাশাপাশি কালিয়াচক-১ ব্লকের মোজমপুর, আলিপুর-১, আলিপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই মূলতঃ লিচু চাষ হয়। ওই এলাকাগুলি ঝড়ের কবলে পড়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে লিচুরও। লিচুতে ক্ষতির পরিমাণও কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত একবছর ধরে চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে কলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। এবারও বহু নতুন চাষি কলাচাষ করেছিলেন। কিন্তু ঝড়ে যেভাবে কলাখেত তছনছ হয়ে গিয়েছে তাতে কলাচাষও ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছে উদ্যানপালন দফতর।

Advertisement

চাঁচলের আমচাষি সুদীপ্ত ঘোষ, শ্যামল দাসরা বলেন, ‘‘বাগানের কয়েকটা গাছও ঝড়ে ভেঙে পড়েছে। গাছে আম প্রায় নেই বললেই চলে। এবার শুরুটা যেভাবে হয়েছিল তার পর যে এভাবে পথে বসতে হবে ভাবিনি।’’ ইংরেজবাজারের বুধিয়া এলাকার চাষি মাহাবুব আলম বলেন, ‘‘এবার আম নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু ঝড়ে পড়া আম ৫০ পয়সা কিলো দরে আচার করার জন্য বিক্রি করতে হচ্ছে।’’

মালদহ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুবোধ মিশ্র বলেন, ‘‘ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ১০ টা ব্লকের আম চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু সরকারের কোনও মাথাব্যাথা নেই। সরকার একটু চিন্তা ভাবনা করলে চাষিরা বাঁচত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন