নবমীর দুপুরে দুষ্কৃতীদের বোমায় নিহত হয়েছিলেন মালদহের বৈষ্ণবনগরের বিজেপির ব্লক সম্পাদক রাম মন্ডল। রবিবার দুপুরে বৈষ্ণবনগরের আকন্দবেড়িয়া গ্রামে নিহত রামবাবুর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বললেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা ও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর এই দুই নেতাকে একসঙ্গে পেয়ে এলাকার দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের কথা শুনে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিলেন বিজেপির রাহুল ও দিলীপবাবু। এখনও বাকি অভিযুক্তরা অধরা থাকায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁরা রাজ্য সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেন।
রাহুলবাবু বলেন, তৃণমূল সিপিএমের গুন্ডাদের নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপিকে দমানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। চেষ্টা করেও দমানো যাবে না বিজেপিকে। দলের ব্লক নেতা খুনের ঘটনার প্রসঙ্গে রাহুলবাবু বলেন, ‘‘দশেরাতে রাবণ বধ হয়। তবে বৈষ্ণবনগরে উল্টো ঘটনা ঘটল। তবে সব সময় উলট পূরাণ হয় না। রাজ্যেও অসুর বধ হবে। যার লড়াই শুরু হবে বৈষ্ণবনগর থেকেই।’’
এ দিকে, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও গণতন্ত্র নিয়ে সামনের মাসে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু। তিনি বলেন, তৃণমূল নেত্রী রাজ্যে বিরোধী শূন্য করে গণতন্ত্রকে হত্যা করার চেষ্টা করছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। খুন, বোমা বাজি করেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এই ইস্যুতে সামনের মাস থেকে লাগাতার আন্দোলন করব। আর দলীয় নেতা খুনের ঘটনায় দ্রুত বাকি অপরাধীরা গ্রেফতার না হলে জেলা জুড়ে আন্দোলন করবে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, নবমীর দিন দুপুরে বৈষ্ণবনগরের আকন্দবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা তথা বিজেপির ব্লক সভাপতি রাম মন্ডলের বাড়িতে চড়াও হয়ে বোমাবাজি করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। ঘটনায় রামবাবু ও তাঁর ভাইপো সিন্টু মন্ডল বোমায় আহত হন। দুইজনকেই মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে রাম মণ্ডলের মৃত্যু হয়। ঘটনায় রামবাবুর স্ত্রী প্রভাদেবী বৈষ্ণবনগর থানায় ২৪ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এখনও মূল অভিযুক্তেরা ফেরার রয়েছে বলে দাবি পরিবারের। দুষ্কৃতীরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। তারপরেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষুব্ধ মৃতের আত্মীয় স্বজনেরা।
এলাকায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য এবং পুলিশি নিষ্ক্রীয়তা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন গ্রামবাসীরা। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিও জানান তাঁরা। রাজ্য ও ব্লক নেতৃত্বের তরফ থেকে নিহতের পরিবারকে অনুদান দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা। প্রভা দেবী বলেন, ‘‘তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত হলেন আমার স্বামী। দল পাশে না থাকলে নাবালক দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।’’