দীর্ঘ বৈঠকের পরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মালদহ জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতির নামই চুড়ান্ত করতে পারল না তৃণমূল। এক পদে দুই দাবিদার থাকায় খামবন্দি করে রাজ্যে সেই নাম পাঠাল জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। মঙ্গলবার দুপুরে বিনয় সরকার অতিথি আবাসে দলের জেলা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে ব্যাপক হইচই হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, প্রকাশ্যেই জেলা পরিষদের দুই গোষ্ঠীর নেতা সহকারী সভাধিপতি হিসেবে দু’জনের নাম ঘোষণা করে দেন। পরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই। সহকারী সভাধিপতি হিসেবে দু’জনের নাম উঠে এসেছে। আমরা সেই নাম দুটি রাজ্য নেতৃত্বকে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ বার রাজ্য নেতৃত্ব ঠিক করবেন।’’
দলবদলের ফলে মালদহ জেলা পরিষদ হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সরলা মুর্মূ সহ মোট ১৫ জন সদস্য যোগ দেন তৃণমূলে। সহকারী সভাধিপতি সহ কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে তৃণমূল অনাস্থা আনলে গরহাজির থাকেন কংগ্রেসের সদস্যেরা। জেলা পরিষদের ৩৮টি আসনের মধ্যে ২৬টি আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে তৃণমূল। সভাধিপতি হিসেবে সরলা মুর্মূ বহাল থাকলেও এখনও সহকারী সভাধিপতি সহ কর্মাধ্যক্ষদের নামের তালিকা করতে পারেনি তৃণমূল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর রয়েছে সহকারী সভাধিপতি এবং ২০ ও ২১ ডিসেম্বর রয়েছে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন। ফলে নামের তালিকা চুড়ান্ত করতে তৎপর হয়ে ওঠে তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত রবিবার কলকাতায় তৃণমূল্যের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির উপস্থিতি বৈঠক হয় দলীয় সদস্যদের নিয়ে। সেই বৈঠকে সহকারি সভাধিপতি হিসেবে দলের সদস্যরা মানিকচকের গৌরচন্দ্র মন্ডল ও ইংরেজবাজারের উজ্জ্বল চৌধুরীর নাম ঘোষণা করেন। গৌরবাবুর পক্ষে ১৮ জন ও বাকিরা উজ্জ্বলবাবুকে সমর্থন জানান। উজ্জ্বলবাবু জেলা পরিষদের তিনবারের জয়ী সদস্য। এ ছাড়া তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতিও ছিলেন। এদিকে, দলের সদস্যদের কাছে গৌরবাবুরও বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এক পদ নিয়ে দুই দাবিদার থাকায় রাজ্য জেলা নেতৃত্বকেই নাম চুড়ান্ত করতে বলে। এদিনের বৈঠকেও ফের এই দুই নাম নিয়ে একে অপেরর সঙ্গে বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায়। এদিন দুপুর দেড়টা থেকে সাড়ে চারটে পর্যন্ত চলে বৈঠক। বৈঠক শেষে ওই দুইজনের নাম রাজ্য পাঠানো হয়।