Crime

‘মায়ের বারণ শুনলে আজ এমন দিন দেখতে হত না!’

ময়না-তদন্তের পরে মঙ্গলবার রাতেই স্থানীয় শ্মশানে কিশোরীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ঘটনার জেরে পরিবারের পাশাপাশি গোটা এলাকা এখনও শোকে স্তব্ধ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ০৫:৫১
Share:

ধর্ষণের পরে তারই ওড়না গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরীকে খুন করে যুবক। প্রতীকী ছবি।

মাত্র ১০ দিনের পরিচয়। কিন্তু যুবক যে বিবাহিত তা জানত না কিশোরী। তাই যুবকের ভালবাসার ফাঁদে পা দিয়ে ছুটে গিয়েছিল সে। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হয়নি মালদহের একটি এলাকার ওই কিশোরীর। ধর্ষণের পরে তারই ওড়না গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরীকে খুন করে যুবক। কিশোরীর দেহ উদ্ধারের কয়েক ঘণ্টা বাদেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তাকে জেরা করে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। ধৃতকে বুধবার আদালতে তোলা হয়। কেন সে এমন কাণ্ড ঘটাল কিনা, তা জানতে ধৃতকে সাত দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পুরনো কোনও অপরাধের সঙ্গে সে যুক্ত কি না তা-ও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

Advertisement

মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘যুবক যে বিবাহিত তা কিশোরী জানত না। বিয়ে করার জন্য কিশোরী চাপ দেওয়ায়, ভয় পেয়ে কিশোরীকে খুন করেছে বলে ধৃত দাবি করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃতকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’’ এ দিকে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের তরফে প্রিয়ঙ্ক কানুনগো জেলা পুলিশ সুপারকে সতর্কতার সঙ্গে অভিযোগের তদন্ত করতে বলেছে। কোনও ভাবেই যাতে নাবালিকার পরিচয় প্রকাশ না হয়, তা খেয়াল রাখতে বলেছে এবং এ বিষয়ে কিছু তথ্য পাঠাতে বলেছে।

ময়না-তদন্তের পরে মঙ্গলবার রাতেই স্থানীয় শ্মশানে কিশোরীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ঘটনার জেরে পরিবারের পাশাপাশি গোটা এলাকা এখনও শোকে স্তব্ধ। কিশোরীর দিদি এ দিন বলেন, ‘‘মা ওকে যেতে বারণ করেছিল। শুনলে, আজ এমন দিন দেখতে হত না! তবে ওই ছেলেটা যাতে আর কারও এমন সর্বনাশ করতে না পারে, তাই এখন একটাই চাওয়া, ওর যেন কঠোর সাজা হয়।’’

Advertisement

মঙ্গলবার সকালে জমি থেকে উদ্ধার হয় বছর পনেরোর এক কিশোরীর মৃতদেহ। তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানো হয়। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মিস্‌ড কলের মাধ্যমেই ধৃতের সঙ্গে কিশোরীর পরিচয় হয়। পরিচয়ের পরে প্রতিদিন যুবকের সঙ্গে ফোনে তাদের কথাবার্তা হত। তার পরে সোমবার কিশোরীকে ডেকে পাঠায় যুবক। তার দেওয়া ঠিকানায় না গেলে, যুবক আত্মহত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়। কিশোরী যাওয়ার পরে তাদের শারীরিক সম্পর্ক হয়। তার পরে কিশোরী বিয়ের জেদ ধরতেই তাকে খুন করা হয় বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছে ধৃত। যদিও পরিকল্পনা করেই কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করতে তাকে ডাকা হয় বলে, নিশ্চিত পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ধৃতের দুই সন্তান রয়েছে। পেশায় সে শ্রমিক। আপাতভাবে এলাকায় নিরীহ বলেই পরিচিত। তবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আগেও সে মেয়েদের সঙ্গে এমন সম্পর্ক তৈরি করে থাকতে পারে। ফলে, তা নিয়েও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন