আক্রান্ত বিজেপি নেত্রী। নিজস্ব চিত্র
বুধবার বিজেপির ডাকা বন্ধ ঘিরে উত্তপ্ত ছিল মালদহ। রক্তও ঝরেছে জেলায়। কখনও তৃণমূল বনাম বিজেপি। আবার কখনও পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি। গাড়িও ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে বন্ধ সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে। গোলমালে এক মহিলা সহ ১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। তবে বন্ধে দোকান, বাজার, বেসরকারি যান চলাচল না করলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির হার ছিল স্বাভাবিক।
সকাল সাতটায় ইংরেজবাজার শহরের সুকান্ত মোড়ে হাজির ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজীব চম্পাটীর নেতৃত্বে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়। হাতে কাঠের লম্বা লাঠি নিয়ে মোটরবাইকে শহরে দাপিয়ে বেড়ান রাজীববাবু। বেশ কিছু টোটোর চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই মোড়েই রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস আটকে দেন বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। সেই সময়েই বাইকে করে হাজির যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি-সহ তাঁর অনুগামীরা। তাঁদেরও কারও মাথায় হেলমেট ছিল না বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। অভিযোগ, ঘটনায় বিজেপির এক মহিলা নেত্রী গুরুতর আহত হন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা পথ অবরোধ করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক সরকারের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী গিয়ে ধরপাকড় করে। দুই মহিলা-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
কোতুয়ালিতেও দু’টি লরি ভাঙচুর চালায় বন্ধ সমর্থনকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। অভিযোগ, সেই সময় পুলিশের উপরে পাল্টা হামলা হয়। একই অবস্থা চাঁচলেও। তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে প্রায় দশ জন কর্মী-সমর্থক আহত হন বলে দাবি। এ দিন দুপুরে বৈষ্ণবনগরের ১৮ মাইলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন বিধায়ক স্বাধীন সরকার। পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু গোলমাল ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
জেলা জুড়ে সমস্ত বাজার কার্যত বন্ধ ছিল। তবে সরকারি সমস্ত দফতরে হাজিরা ছিল ৯৯ শতাংশ। তবে এ দিনের বন্ধকে বিজেপির শক্তি যাচাই হিসেবে দেখছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, “পুলিশ ও তৃণমূল নেতারা এক হয়েও বনধ ব্যর্থ করতে পারেনি।” তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, “মালদহের মানুষ বনধের বিরোধী। তাই বনধ উপেক্ষা করেই জনজীবন স্বাভাবিক ছিল।’’