ফাইল চিত্র।
রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরির কাজে যাতে কোনও বাধা সৃষ্টি না হয়, সেই ব্যাপারে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নজর রাখার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচের হাসপাতাল তৈরি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন কংগ্রেসের প্রয়াত সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। তারপরে কুলিক নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সরকারের আমলে সেখানে এইমসের ধাঁচের হাসপাতাল হয়নি। সেই নিয়ে রায়গঞ্জের যে ক্ষোভ রয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রী জানেন। তিনি রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ করতে উদ্যোগী হয়েছেন। বৃহস্পতিবার হেমতাবাদের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছি। ইতিমধ্যে ২০ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। হাসপাতাল তৈরির কাজে যাতে কোনও বাধা সৃষ্টি না হয়, সেই ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নজর রাখতে হবে।’’
বিরোধীদের কোনও আন্দোলনের জেরে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরির কাজে বাধা আসতে পারে কি না, তা এ দিন প্রশাসনের কর্তাদের কাছে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেরকম কোনও আশঙ্কা বা সম্ভাবনা নেই বলে দাবি করে প্রশাসনিক কর্তারা মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ গৌতম পাল, রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান অরিন্দম সরকার, জেলা পরিষদ সদস্য মোশারফ হোসেন, কালিয়াগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক পাল ও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষকে ডেকে ওই হাসপাতাল তৈরির কাজ সুষ্ঠু ভাবে চালু রাখতে নজর রাখার নির্দেশ দেন।
গৌতমবাবু ও অসীমবাবু বলেন, ‘‘আগামী দু’বছরের মধ্যে ওই হাসপাতাল তৈরির কাজ শেষ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই ব্যাপারেই আমাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন।’’
বস্তুত, গত বছরের ১ অগস্ট চোপড়ায় সরকারি জনসভায় যোগ দিয়ে রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরুর শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তার আগে ওই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে রায়গঞ্জে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল তৈরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই ছয় তলার ওই হাসপাতাল তৈরির জন্য ১৮০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেটি তৈরির জন্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল চত্বরের ১৫ একর ও উদয়পুর এলাকায় ১০ একর সরকারি জমি চিহ্নিত করা হয়। ইতিমধ্যেই জেলা হাসপাতাল চত্বরে ভবন তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। জেলা হাসপাতালও সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। জেলা হাসপাতালের সঙ্গে প্রস্তাবিত নয়া ভবন সংযুক্ত করে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চালু করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।
রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জেরে রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ না করায় রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল হয়নি। আমরা চাই আগে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হোক।’’