সকালেই গন্ডার রাস্তা পারাপার করেছে। আগের দিন রাতে ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল হাতির দল। সেই রাস্তা ধরেই হেঁটে বেড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন বিকেল গড়িয়ে পড়ছে। চিলাপাতার গভীর জঙ্গলে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। নানা পাখির কলতান ভেসে বেড়াচ্ছে জঙ্গলময়। সাদা, হলুদ রংয়ের প্রজাপতি ঘুরে বেড়াচ্ছে পাতায় পাতায়। মুখ্যমন্ত্রীর মুখে হাসি।
বুধবার আলিপুরদুয়ারের কোদালবস্তিতে প্রশাসনিক বৈঠক শেষ করে কনভয় নিয়ে তিনি সোজা চলে যান চিলাপাতার জঙ্গলের ভিতরে।
দিদি কেমন লাগছে?
জঙ্গলের ভিতরে প্রশ্নটা ছুড়ে দিতেই মুচকি হাসেন তিনি। কোনও উত্তর না দিয়েই হেঁটে যান।
প্রশাসনিক বৈঠকে অবশ্য তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “চিলাপাতা নিয়ে পরিকল্পনা নিতে হবে। বানিয়া নদীর পাশে প্রকল্প নিতে হবে। এখন শুধুমাত্র একটি সরকারি ছোট বনবাংলো আছে। সেটি যথেষ্ট নয়। আরও করতে হবে।”
তিনি সে ব্যপারে পর্যটন সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয়। চিলাপাতা, চালসা, জলঢাকা, ঝালং, বিন্দুকে ঘিরে ইকো ট্যুরিজম হাব তৈরি করার ব্যাপারে নির্দেশ দেন।
হোম ট্যুরিজমও গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই চিলাপাতারা জঙ্গল ঘেরা এই এলাকা অবহেলিত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আগে কোনও কাজ হয়নি। এখন হচ্ছে। আরও করতে হবে।”
রাতে জঙ্গলের কাছেই একটি বনবাংলোতেই ছিলেন তিনি। ওই বাংলোতেই ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে একবার ওই রাস্তা ধরেই ভাইপোকে নিয়ে কিছুটা হেঁটেছিলেন তিনি।
বিকেলেই হাঁটা ছিল অবশ্য একটু অন্যরকম। তখন জঙ্গল একটু আলাদা রকম হয়ে উঠতে শুরু করেছে। বনকর্মীরাই জানান, এই সময়ই হাতি, বাইসন, গন্ডার রাস্তার কাছাকাছি চলে আসে। এপার-ওপার হয়। মুখ্যমন্ত্রী যে রাস্তায় হেঁটেছেন, তা ঠিক হাতি পারাপারের করিডরেই।
তাঁর সঙ্গে অবশ্য বনকর্মী থেকে পুলিশ সকলেই ছিলেন। বলতে বলতেই মুখ্যমন্ত্রী যাওয়ার ঠিক দুই মিনিটের মাথায় একদল বাইসন বেরিয়ে আসায় রাস্তায়। এক বনকর্মী বলেন, “ভয় নেই। ওদের আঘাত না দিলে কাউকে কিছু করবে না।” মুখ্যমন্ত্রী তখনও জঙ্গলেই বনবস্তি কাছে। হাত নাড়িয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন। শিশুদের হাতে তুলে দেন চকলেট।