নোট বাতিল নিয়ে ফের সরব মমতা

নোট বাতিলের পরে আড়াই মাস হয়ে গিয়েছে। এখনও বিশেষ করে গ্রামীণ ও মফস্সল এলাকায় নগদের ঘাটতির ফলে ধাক্কা খাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এই প্রসঙ্গে প্রথম থেকেই চড়া সুরে কেন্দ্র-বিরোধী প্রচার চালিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০০
Share:

উত্তরবঙ্গ সফর শেষে কলকাতা ফেরার আগে শিলিগুড়ির সুকনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। বুধবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

নোট বাতিলের পরে আড়াই মাস হয়ে গিয়েছে। এখনও বিশেষ করে গ্রামীণ ও মফস্সল এলাকায় নগদের ঘাটতির ফলে ধাক্কা খাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এই প্রসঙ্গে প্রথম থেকেই চড়া সুরে কেন্দ্র-বিরোধী প্রচার চালিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন শিলিগুড়ি ছাড়ার আগে আরও এক বার সরব হলেন তিনি। কেন্দ্রের প্রতি বার্তা দিতে গিয়ে বললেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে প্রজাদের তরফ থেকে অনুরোধ, নোট সংক্রান্ত যাবতীয় বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নিন।’’ একই সঙ্গে জানালেন, যা-ই ঘটুক না কেন, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবারই পাহাড় থেকে নেমে এসেছিলেন শিলিগুড়ির কাছে সুকনায়। এ দিন সেখান থেকে বেরনোর সময়ে মমতা বলেন, ‘‘প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এই প্রথম উপলব্ধি হচ্ছে যে, দেশবাসী অর্থনৈতিক ভাবে পরাধীন। নোটবন্দির কবলে পড়ে সাধারণ মানুষ আজকে নিজস্ব টাকা পর্যন্ত ঠিক মতো তুলতে পারছে না।’’ দেশবাসী যখন নগদ সঙ্কটে ভুগছেন, তখন সাধারণ করদাতাদের টাকায় বিজেপি সরকার নিজেদের দলের প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘সরকারের এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা উচিত। আমার টাকা কেড়ে নিয়ে রাজনৈতিক দলের নামে কর্মসূচি করবে, এটা চলতে পারে না। হতে পারে না।’’

নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করাতেই দলীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিবিআই গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল নেত্রীর দাবি, ‘‘সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও অপরাধ করেননি।’’ একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’ বিজেপির নাম করে তাঁর আক্রমণ, ‘‘যারা চোর ডাকাত, হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়েছে, তারা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে নেতাদের সঙ্গে। বিজেপির প্রচ্ছন্ন মদতে নেতাদের সঙ্গে আছে।’’

Advertisement

অর্থনৈতিক পরাধীনতার গ্লানি দেশবাসীর সামনে সঙ্কটের কারণ বলে মনে করেন মমতা। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের পরে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন। সেই ঘোষণাকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘তিন মাস হতে চলল। নিজের টাকা তোলার স্বাধীনতাও নেই দেশবাসীর।’’

নোট বাতিলের পরে দেশ জুড়ে নগদের সঙ্কটের আঁচ পড়েছিল বাংলার মফস্সল শহর থেকে গ্রামে। ক্ষুদ্র এবং কুটির শিল্পে মন্দা আসতে শুরু করেছে বলে অর্থনীতিবিদদের একাংশের দাবি। মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসঙ্গ এসেছে।

এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মচারী, ছোট শিল্প, বেসরকারি কর্মী— সকলে ব্যাঙ্কে টাকা রাখতে পারে। করদাতাদের টাকা তোলার ক্ষেত্রে এ ভাবে বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার নেই। ভারতের অর্থনীতি শ্লথ হয়েছে, পতন শুরু হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন