মৃত: শেয়ালের দেহ উদ্ধার করে বন দফতরকে দেওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র
শেয়ালের হামলার আলাদা তিনটি ঘটনায় উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও ইটাহারে তিন জন জখম হয়েছেন। এর মধ্যে শুক্রবার রায়গঞ্জের দেহখণ্ডা এলাকার ঘটনায় হামলাকারী শেয়ালটিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বন দফতরের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় একটি পশুপ্রেমী সংগঠন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পেশায় চাষি গোবিন্দ বর্মণ বাড়ির পাশে জমির পাশে রাস্তার ধারে আগুন পোহাচ্ছিলেন। সেই সময় একটি শেয়াল তাঁর গাল কামড়ে ধরে বলে দাবি। তিনি জানান, নিজেকে বাঁচাতে তিনি দু’হাত দিয়ে শেয়ালটির গলা চেপে ধরেন। তাতেই শেয়ালটি মারা যায়। জখম গোবিন্দকে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। এ দিন সকালে দেহখণ্ডা থেকে শেয়ালটির রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে বন দফতরের হাতে তাঁরা তুলে দিয়েছেন বলে দাবি। তবে শেয়ালটি শ্বাসরোধের জেরে মারা গিয়েছে বলে গোবিন্দ যে দাবি করেছেন, তা মানতে চায়নি স্থানীয় একটি পশুপ্রেমী সংগঠন। তাদের অভিযোগ, শেয়ালটিকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।
যদিও গোবিন্দের কথায়, ‘‘শেয়ালের দাঁত বসে আমার গাল থেকে রক্ত বেরোতে শুরু করে। নিজেকে বাঁচাতে দু’হাত দিয়ে শেয়ালটির গলা টিপে ধরে রেখে চিত্কার শুরু করি। সেই সময় আমার প্রতিবেশী অজিত বর্মণ শাবল এনে শেয়ালটির মুখে ঢুকিয়ে মোচড় দিয়ে কোনও রকমে ওটিকে সরিয়ে দেন।’’
স্থানীয় পশুপ্রেমী সংগঠনের সভাপতি ভীমনারায়ণ মিত্র ও সম্পাদক অজয় সাহা রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাসে গিয়ে বন দফতরে ওই শেয়ালটিকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। ভীমনারায়ণের কথায়, ‘‘বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী বন দফতরের কর্তাদের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করার দাবি জানানো হয়েছে। কেউ আত্মরক্ষার্থে শেয়ালটিকে মেরে থাকলে, তা আদালতে প্রমাণ করুক।’’ বন দফতরের রায়গঞ্জের রেঞ্জ অফিসার উপানন্দ রায়ের বক্তব্য, রায়গঞ্জের পশু হাসপাতালে শেয়ালটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। বন দফতরের তরফে পুলিশে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হবে।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার রাতে ইটাহারের ডামডোলিয়ার বাসিন্দা পেশায় চাষি নাসিমুল হক বাড়ির পাশের ভুট্টা খেত দেখতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় একটি শেয়াল আচমকা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কামড়ে পালিয়ে যায় বলে দাবি। রক্তাক্ত অবস্থায় এর পরে তাঁকে বাসিন্দারা হাসপাতালে ভর্তি করান। প্রায় একই সময়ে সুরুণের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর ওজেদা নামে এক মহিলা জমি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় একটি শেয়াল তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। ওজেদার কথায়, ‘‘আচমকা হামলায় আমি রাস্তায় পড়ে যাই। এর পর শেয়ালটি আমার দুই পায়ে, হাতে-ঘাড়ে কামড় দেয়।’’