মালদহেই লাগাম ছেঁড়া আমের দর

কিছুতেই দাম কমছে না হিমসাগর, ল্যাংড়া, আলতা পেটি এবং লক্ষ্মণভোগ আমের। উল্টে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে অন্য দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার আরও দশ টাকা বাড়তি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে মালদহ জেলার এই সুস্বাদু আমগুলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৬ ০২:২৪
Share:

আমের জেলাতেই আম ছুলে ছ্যাঁকা লাগছে। —নিজস্ব চিত্র।

কিছুতেই দাম কমছে না হিমসাগর, ল্যাংড়া, আলতা পেটি এবং লক্ষ্মণভোগ আমের। উল্টে জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে অন্য দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার আরও দশ টাকা বাড়তি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে মালদহ জেলার এই সুস্বাদু আমগুলি। আমের জেলাতেই লাগাম ছাড়া দাম হওয়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। যদিও খুচরো বাজারের থেকে জেলার বাগানগুলিতে অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে হিমসাগর, ল্যাংড়ার মতো আম। অভিযোগ, আম নিয়ে মালদহ জেলায় ফাটকা বাজি চলছে। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাগান থেকে সস্তা দরে আম কিনে খোলা বাজারে চড়া দামে বিক্রি করছে। যার ফলে মরসুমের শুরু থেকেই খোদ মালদহতেই চড়া দামে বিকোচ্ছে আম। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন এবং উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের নজরদারির অভাবকেই দায়ী করেছেন সাধারণ মানুষ। এই বিষয়ে উদ্যান পালন দফতরের সহ অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখন জেলার বাগানগুলিতে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ আম মজুত রয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছর জেলাতে আমের উৎপাদন ভাল হয়েছে। তবে দাম কেন কমছে না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’’

Advertisement

আমের জেলা মালদহ জেলা। প্রতি বছরই এই জেলাতে লক্ষ লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। বিগত বছর জেলাতে সাড়ে চার লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছিল। যা সর্বকালের রেকর্ড। চলতি বছরও জেলাতে প্রায় তিন লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়েছে বলে দাবি উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের। জেলাতে লক্ষ লক্ষ আম উৎপাদন হলেও এ বারে আমের বাজার শুরু থেকেই চড়া। আর জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে অন্য দিনের তুলনায় এদিন এক লাফে আরও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। যার ফলে বাজারে গিয়ে আম না কিনেই ফিরতে হচ্ছে আম রসিকদের।

ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার মরসুমের শুরু থেকেই আমের দাম বেশ চড়া। গোপালভোগ হোক কিংবা হিমসাগর এবং ল্যাংড়া থেকে লক্ষ্মণভোগ। খোলা বাজারে এই আমের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার নীচে কিছুতেই নামছে না এ বার। তবে বাগানগুলিতে খোলা বাজার থেকে অনেকটা সস্তা দরে আম বিক্রি হচ্ছে। বাগানে হিমসাগর ২৪ টাকা, ল্যাংড়া ২২ টাকা, লক্ষ্মণভোগ ১৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরো বাজারে এই আমগুলিই আবার দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। এ দিন হিমসাগর ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ল্যাংড়া ৫০ থেকে ৫২ টাকা, লক্ষ্মণভোগ আম ২৫ খেকে ৩০ টাকা, আলতাপেটি ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে জেলারই খুচরো বাজারে। এই বিষয়ে বাগান মালিক সুব্রত মণ্ডল, অশোক দাস প্রমুখেরা বলেন, ‘‘এ বার আমরাও ভাল দাম পাচ্ছি। বাগানের থেকে খোলা বাজারের আমের দামের বিশাল ফারাক রয়েছে।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, কারণ হল এক শ্রেণির ব্যবসায়ী বাগান থেকে প্রচুর পরিমাণে আম কাঁচা অবস্থায় কিনে নিচ্ছে। কার্বাইডের সাহায্য সেই আম পাকিয়ে নিয়ে জামাইষষ্ঠীর আগে বাজারে ছেড়ে দিচ্ছে। আর খুচরো ব্যবসায়ীরা বেশি দামে আম কেনায় বাধ্য হয়ে তাঁরা আবার সাধারণ মানুষের থেকে লাগাম ছাড়া দাম নিচ্ছে। এই বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত। এ দিন বাজারে গিয়ে আমের দাম নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন শহরের বাসিন্দা শুভঙ্কর দাস, সনাতন কুণ্ডু প্রমুখেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘বাজারে গিয়ে মনে হচ্ছে যেন অন্য জেলার বাজারে গিয়ে আম নিচ্ছি। মালদহ আমের জেলা হওয়া সত্ত্বেও ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে আম কিনতে হচ্ছে।’’ মালদহের অতিরিক্ত জেলা শাসক দেবতোষ মন্ডল বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement