হোটেলে উদ্ধার দম্পতির দেহ, বেঁচে সন্তান

পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম, সুপ্রিয়া বসাক রায় (২৬) এবং প্রদীপ বসাক (৩৬)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫১
Share:

উদ্ধার: নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র

হোটেলের বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল এক দম্পতির দেহ। শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি শহরের ঘটনা। এ দিন টেম্পল স্ট্রিটের একটি হোটেলের ঘর থেকে ওই দম্পতির দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, মহিলার দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। এবং তাঁর পাশেই বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে ছিল স্বামীর দেহ। স্বামীর দেহের নীচে চাপা পড়ে কাঁদছিল দম্পতির সাড়ে তিন বছরের মেয়ে। ওই শিশু এখন জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম, সুপ্রিয়া বসাক রায় (২৬) এবং প্রদীপ বসাক (৩৬)। গত শুক্রবার দুপুরে ওই দম্পতি হোটেলের ঘর ভাড়া নেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল তাঁদের মেয়েও। শনিবার সকালে বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে একটানা বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে হোটেল কর্মীরা প্রথমে দরজায় ধাক্কা দেন। পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মেয়েকে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে হোটেলের ঘরে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দম্পতি। হাসপাতাল সূত্রেও জানা গিয়েছে, ওই শিশুকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছিল। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে স্বামী, স্ত্রী দু’জনের শরীরেই কীটনাশক মিলেছে বলে পুলিশের দাবি।

Advertisement

ওই দম্পতি ফালাকাটার গোকুলনগরের বাসিন্দা। প্রদীপবাবু আলুর ব্যবসা করতেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি।”

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, গত শুক্রবার দুপুর দেড়টা নাগাদ মেয়েকে নিয়ে ওই দম্পতি হোটেলে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল একটি মাত্র ব্যাগ। দু’বার হোটেল থেকে দম্পতি বেরিয়েছিলেন বলে পুলিশ জেনেছে। হোটেল কর্মীদের একাংশের দাবি, শুক্রবার রাত আটটা নাগাদ ঘরে ঢুকে যান ওই দম্পতি। দুপুরে বা রাতে হোটেলে থেকে কোনও খাবার তাঁরা নেননি বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। কার আগে মৃত্যু হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। কোতয়ালি থানায় আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‘অনেক সম্ভাবনাই উঠে এসেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় সুপ্রিয়া দেবীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওড়নার মাঝের অংশ ফ্যানের সঙ্গে জড়িয়ে দু’দিকে নামানো হয়েছিল। এক প্রান্তে সুপ্রিয়াদেবীর দেহ ঝুলছিল বলে পুলিশের দাবি, অন্য প্রান্ত কিছুটা নামানো ছিল। বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেহ উদ্ধার হলেও প্রদীপবাবুর গলাতেও ফাঁসের দাগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের অনুমান, প্রদীপবাবুর দেহ কোনওভাবে ওড়নার ফাঁস খুলে বিছানায় পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন। বিছানায় শুয়ে ছিল তাঁদের সাড়ে তিন বছরের মেয়ে। তার উপরেই প্রদীপবাবুর দেহ পড়ে গিয়ে থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। বাবার দেহের ভারে উঠতে পারছিল না ওই শিশু। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, ‘‘ওই শিশুটি বর্তমানে শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। খুব একটা ভাল নেই শিশুটি।’’

প্রদীপের ভাই শ্যামল বসাক বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে দাদা বাড়ি থেকে বের হয়। কোনওরকম অশান্তি ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন