মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।—ফাইল চিত্র।
এক দিকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। অন্য দিকে রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েইছে। এই দুইয়ের মাঝে দাঁড়িয়ে আজ, মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভায় বাজেট পেশ করতে চলেছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।
কৃতিত্বের জন্য আয়ের উপায় বাতলে উন্নয়নের দিশা দেখাতে হবে তাঁকে। তেমনই ৪৭ আসনের পুরবোর্ডে ২২টি আসন নিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না-থাকায় কী ভাবে বাজেট পাশ করাবেন সেই চিন্তাও করতে হচ্ছে তাঁকে। আর সে দ্বন্দ্ব কাটাতে বাজেট পেশের আগে সোমবার বিকেলে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটককে ফোন করে তাঁর সঙ্গে আলোচনাতেও বসতে চেয়েছেন মেয়র।
বাজেট পাশ করাতে কংগ্রেসের চার কাউন্সিলরের সমর্থন জরুরি বুঝে দলের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকরকে আগেই চিঠি দিয়েছেন মেয়র। সেই মতো শঙ্করবাবুর বাড়িতে গিয়ে তাঁদের কাউন্সিলরদের সমস্যা, অসন্তোষের কথা শুনেছেন। তা মেটাতে আশ্বাস দিয়েছেন।
বাইরে কাজে থাকায় ওই বৈঠকে ছিলেন না সুজয়বাবু। জেলা কংগ্রেসের শঙ্করবাবু বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত সুজয়বাবুর ঘনিষ্ঠরা। মেয়র বিজেপি’র দুই কাউন্সিলরদের কাছেও বাজেট পাশ করাতে সমর্থন চাওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। সুজয়বাবুও বিষয়টি নিয়ে তাঁর চিন্তার কথা জানিয়েছেন। তাতে উদ্বেগ বেড়েছে মেয়রের। শঙ্করবাবু যদি শেষ পর্যন্ত আশ্বস্ত করেনও তবু পরিষদীয় দলনেতা সুজয়বাবু কী করবেন তা নিয়ে ভাবনায় রয়েছেন। সে কারণেই সুজয়বাবুর আশ্বাস পেতে তিনি তাঁর সঙ্গে বসতে চাইছেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘মেয়র ফোন করে আলোচনায় বসতে চেয়েছেন। আলোচনায় বসব বলেই জানিয়েছি।’’ মেয়রও জানিয়েছেন, তিনি পরামর্শ চেয়ে সুজয়বাবুকে আগেই চিঠি দিয়েছেন, ফোনও করেছেন। তাঁদের পরামর্শও চান।
তবে পুরসভার কংগ্রেস পরিষদীয় দলের তরফে বাজেটে কোনও বিষয় রাখার জন্য এখনও কোনও প্রস্তাব বা পরামর্শ দেওয়া হয়নি। মেয়র সমস্ত দলের কাউন্সিলরদের চিঠি দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে বাজেটের পরামর্শ চাওয়ার পর বিজেপি’র তরফে অবশ্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘গত বছর বাজেটের সময় ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও তা কার্যকর হয়নি। তাই এখনও কিছু দেইনি। মেয়রের বাজেট কী পেশ করেন তা আগে দেখি।’’ তৃণমূলের তরফে প্রস্তাব দেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘গত তিন বছর ধরে মেয়র কোনও কাজই করতে পারেননি। তাই তাঁকে কিছু জানিয়ে লাভ নেই।’’
মেয়রের দাবি, অন্য পুরসভার বাজেট করা এবং তাঁর বাজেট করার মধ্যে ফারাক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘অন্য পুরসভা রাজ্যের কাছ থেকে অর্থ পাচ্ছে। তাদের চিন্তা করতে হচ্ছে না। আমাকে অর্থ সংস্থান করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন কাজটা আগে করব ঠিক করতে হচ্ছে। আবার বাজেট পাশ করানোর চিন্তাও করতে হচ্ছে।’’