পঞ্চায়েতে প্রহৃত সদস্য

পুলিশের সামনেই পঞ্চায়েত অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা ও দরজা ভেঙে উপপ্রধান-সহ তিন পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধর করা হয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২০
Share:

আহত: নার্সিংহোমে পঞ্চায়েত সদস্য উত্তম ঘোষ। নিজস্ব চিত্র

আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে সিপিএমের দখলে থাকা পঞ্চায়েত অফিস ভাঙচুর এবং দফতরের লোকেদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একদল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

পুলিশের সামনেই পঞ্চায়েত অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা ও দরজা ভেঙে উপপ্রধান-সহ তিন পঞ্চায়েত সদস্যকে মারধর করা হয়েছে বলে সিপিএমের অভিযোগ। শুক্রবার দুপুরে মাটিগাড়া থানার আঠারোখাই পঞ্চায়েত দফতরের ঘটনা। একই সঙ্গে দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা অবধি পঞ্চায়েত প্রধানকে ঘেরাও করে রাখা হয়। এক জখম পঞ্চায়েত সদস্য, উত্তম ঘোষকে সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথায় চোট রয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ, শনিবার শিবমন্দিরে মিছিলের ডাক দিয়েছে সিপিএম। তৃণমূলের তরফে অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ধাক্কাধাক্কি করতে গিয়ে নিজেই পড়ে গিয়ে ওই পঞ্চায়েত সদস্য চোট পেয়েছেন বলেও শাসক দলের নেতাদের দাবি।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত, পুরসভা জবরদখলের রাজনীতি চলেছে। আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েতে তা করতে না পেরে মারধর, হামলা হয়েছে। পুলিশ নীরব দর্শক হিসেবে সব দেখেছে। আমরা রাস্তায় নামব।’’

Advertisement

পুলিশ ও পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, সরকারি টাকায় কুয়ো সংস্কার, জল প্রকল্পের টাকা হিসেবে চেয়ে এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ পঞ্চায়েত দফতরে স্মারকলিপি দিতে যান মাটিগাড়া ব্লকের তৃণমূলের কয়েক জন নেতানেত্রী। নেতৃত্বে ছিলেন ব্লকের কার্যকরী সভাপতি দুর্লভ চক্রবর্তী। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএমের বোর্ড ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্নীতিতে জড়িয়েছে। কুয়ো সংস্কারের কাজে ১১ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সরকারি টাকায় বাম নেতা-কর্মীদের ২০টি ব্যক্তিগত কুয়োর সংস্কার হয়েছে। তেমনিই, একটি জল প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ১০ লক্ষ টাকা অন্যত্র খরচ করে দেওয়া হয়েছে। এক বাম সদস্য আবাস প্রকল্পে নাম তুলে টাকা দাবি করছেন। এর প্রতিবাদে জনপ্রতিনিধি ও নেতা-কর্মীরা পঞ্চায়েত ঘেরাও করেন। রাতে প্রধান বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে তদন্ত করার লিখিত আশ্বাস দিলে ঘেরাও ওঠে।

দুর্লভবাবুর দাবি, ‘‘প্রধান নিজের দলের সদস্য আর লোকজন নিয়ে ঘরে বসে ছিলেন। স্মারকলিপি নিতে চাইছিলেন না। আমরা কতক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে থাকব? কর্মীরা ভিতরে ঢুকতে গেলে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়, উত্তমবাবু তাতে নিজেই পড়ে যান।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমরাই তাঁকে হাসপাতালে পাঠাই। কে বা কারা সিসিভিটি বা দরজা ভেঙে দিয়েছে, আমার জানা নেই। দুর্নীতি, স্বজনপোষণ আড়াল করতে চাইছেন প্রধান।’’

সিপিএম প্রধান অসিত নন্দী অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, পিএইচই-র সাহায্য পাইনি, তাই জল প্রকল্পের টাকা অন্য উন্নয়নে গিয়েছে। আর কুয়ো সংস্কার নিয়ম মেনেই হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আসলে গোটাটাই শক্তি প্রদর্শন হল। পুলিশের সামনে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, মারধর হল। অভিযোগ করব। দেখি পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন