Mid day Meal Cook

হেনস্থার ভয়ে স্কুলে আসছেন না রাঁধুনিরা, মিড ডে মিলের বদলে কেক, বিস্কুটে পেট ভরাতে হচ্ছে পড়ুয়াদের

মিড ডে মিলের রাঁধুনিদের অভিযোগ, টিচার ইন চার্জের মদতে এক অভিভাবিকা রান্নাঘরে ঢুকে তাঁদের হেনস্থা করেছেন। তাই ভয়ে স্কুলে যাচ্ছেন না তাঁরা। বিষয়টি জানানো হয়েছে প্রশাসনকেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৫:১৫
Share:

মিড ডে মিল নিয়ে সমস্যায় কেক, বিস্কুট খেতে হচ্ছে জলপাইগুড়ির একটি স্কুলের পড়ুয়াদের। প্রতীকী ছবি।

হেনস্থার ভয়ে স্কুলে আসছেন না রাঁধুনি। ফলে তৈরি হচ্ছে না মিড ডে মিল। বদলে কেক বিস্কুট খাইয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে খুদে পড়ুয়াদের। প্রায় সাত দিন ধরে চলা এই জটিলতা এখনও কাটেনি জলপাইগুড়ি শহরের মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে।

Advertisement

জলপাইগুড়ি শহরের মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগে প্রায় ৮০ জন পড়ুয়া। গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ওই স্কুলে মিড ডে মিল রান্না বন্ধ। বদলে পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে কেক, বিস্কুট ইত্যাদি। কিন্তু শুকনো খাবারে খুশি নয় পড়ুয়ারা। তাদের দাবি, দ্রুত চালু হোক মিড ডে মিল।

অভিযোগ, সম্প্রতি স্কুলের দুই রাঁধুনিকে হেনস্থা করেন এক অভিভাবিকা। বিষয়টি বিভিন্ন দফতরে লিখিত ভাবে জানিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেছেন রাঁধুনিরা। ‘টিচার ইন চার্জ’ (টিআইসি) সরিতা চৌধুরী বলেন, ‘‘২২ তারিখ থেকে স্কুলে রাঁধুনি আসছেন না। ফলে রান্না হচ্ছে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের নির্দেশেই আপাতত শুকনো খাবার দিচ্ছি।’’ রাঁধুনি আশা রজক বলেন, ‘‘আগে স্কুলের মিড ডে মিলের দায়িত্বে ছিলেন টিআইসি। খাবারের মান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ ছিল। তার তদন্তে একটি টিম এসেছিল। আমি তাঁদের অভিযোগ করেছিলাম, ছাত্রীদের রান্নার জন্য মোট যত পরিমাণ তেল, ডাল, মশলা ইত্যাদি প্রয়োজন তা আমাদের সরবরাহ করা হয় না। ফলে রান্না খারাপ হয়। এর পর টিমের সদস্যরা আমাদেরই মিড ডে মিল বানিয়ে খাওয়ানোর নির্দেশ দেন। তাঁদের নির্দেশ পেয়ে আমরাই খাবার দিচ্ছিলাম। এক দিন আমাদের রান্নাঘরে কিছু অভিভাবিকাকে পাঠিয়ে দেন সরিতা। ওই অভিভাবিকাদের মধ্যে একজন এসে আমাদের হেনস্থা করেন। তার পর থেকেই আমরা ভয়ের চোটে আর স্কুলে আসছি না।’’

Advertisement

অভিলাশা ঝাঁ নামে এক ছাত্রী বলে, ‘‘রান্না করা খাবারের মান খুবই খারাপ। এখন আমাদের কেক, বিস্কুট দেওয়া হচ্ছে। এ সব খেতে কি ভাল লাগে! আমরা চাই নতুন রাঁধুনি আসুন। সুস্বাদু খাবার খেতে দেওয়া হোক আমাদের।’’

ঘটনায় জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই প্রাইমারি) শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, ‘‘এই স্কুল থেকে আমরা মিড ডে মিল সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা ওসি মিড ডে মিল, বিডিও সবাইকেই জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।’’

প্রসঙ্গত, মাড়োয়ারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের টিআইসির বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন এক শিক্ষিকা। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে অভিযোগও দায়ের হয়। এর পর তার তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ডি আই প্রাইমারি শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘তদন্ত প্রায় শেষ হয়েছে। রিপোর্ট জমা পড়লেই আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

এ সবের মাঝেই দুপুরের খাবারের বদলে কেক, বিস্কুট খেয়েই পেট ভরাতে হচ্ছে ছোট ছোট পড়ুয়াদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন