গরিবের তালিকায় মন্ত্রীর নাম, অস্বস্তিতে প্রশাসন

খাদ্য সুরক্ষা আইনে গরিবের তালিকায় রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর নাম ওঠায় অস্বস্তিতে রাজ্যের খাদ্য দফতর। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসকের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে ভুলত্রুটিগুলি সংশোধনের জন্য খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন। তা ছাড়া এ ব্যাপারে পূর্তমন্ত্রীর কোনও দোষ নেই। ওই কার্ডে কোনও খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দও হয়নি। পূর্তমন্ত্রী নিজেই ওই কার্ড বাতিল করতে চিঠি দিয়েছেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৫ ০২:৫২
Share:

খাদ্য সুরক্ষা আইনে গরিবের তালিকায় রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর নাম ওঠায় অস্বস্তিতে রাজ্যের খাদ্য দফতর। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসকের কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে ভুলত্রুটিগুলি সংশোধনের জন্য খাদ্যমন্ত্রী বলেছেন। তা ছাড়া এ ব্যাপারে পূর্তমন্ত্রীর কোনও দোষ নেই। ওই কার্ডে কোনও খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দও হয়নি। পূর্তমন্ত্রী নিজেই ওই কার্ড বাতিল করতে চিঠি দিয়েছেন।’’ সমীক্ষায় ডাটা এন্ট্রির সময় ওই ভুল হয়েছে বলে দাবি করে জেলাশাসক পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, একটি প্রকল্প চালুর শুরুতে ভুলত্রুটি হয়। খাদ্যমন্ত্রী সেগুলি সংশোধনের জন্য জেলাশাসককেই দায়িত্ব দিয়েছেন বলে তাপসবাবু জানান।

Advertisement

তবে কী ভাবে পূর্তমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের নাম স্পেশাল প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডের তালিকায় উঠল, তার ব্যাখ্যা দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছে রাজ্য বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিজেপির প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘দলের জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে বলেছি।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের বিজেপির জেলা সভাপতি গৌতম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দলের সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট চেয়েছেন। আমরা তা জানতে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’’

দক্ষিণ দিনাজপুরের গত মাস থেকে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে রাজ্যে প্রথম খাদ্য সুরক্ষা আইন প্রকল্প চালু করতে উপভোক্তাদের ডিজিটাল রেশন কার্ড বিলি শুরু হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি ব্লকে খাদ্যশস্য বিলি শুরু হতেই ডিজিটাল কার্ড নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বাসিন্দারা সরব হয়েছেন। খাদ্য সুরক্ষা আইনে বিপিএল তালিকার অবলুপ্তি হয়ে ‘প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড’ তৈরি করা হয়েছে। এবং অতি দরিদ্ররা হয়েছেন ‘স্পেশাল প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড’। বুধবার কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায় দাবি করেন, বিশেষ প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডের তালিকায় মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি আগে বিপিএল তালিকায় নাম ছিল, এমন কয়েক হাজার গরিব মানুষের নাম খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্প থেকে বাদ গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে জেলা কংগ্রেস সভাপতি সরব হন।

Advertisement

এ দিন বিজেপির বিশ্বপ্রিয়বাবু কংগ্রেসের সুরেই বলেছেন, ‘‘পূর্তমন্ত্রী বিষয়টি জেনে তাঁর নাম বাদ দিতে বলেছেন বটে, কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, ওই তালিকায় কেন তাঁর নাম উঠবে? কেমন করে মন্ত্রীর নাম উঠলো, কারা তুললেন এসব জানা দরকার।’’ তিনি জানান, প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডের নামে আদতে ঠিক কী হয়েছে, তার নমুনা ইতিমধ্যে মিলতে শুরু করেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, রেশন দোকানে বসে অর্থনীতির সমীক্ষা করায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। পূর্তমন্ত্রীর নাম গরিবের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন মহলে আলোড়ন পড়েছে। সময় মতো এ জেলায় প্রকল্পটি চালু করতে পারেনি খাদ্য দফতর। এখনও পর্যন্ত জেলার একাধিক ব্লকে ডিজিটাল কার্ড বিলির কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। যতটুকু হয়েছে, তাতে ভুরিভুরি অভিযোগ উঠতে থাকায় জেলা প্রশাসন চরম অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন